1. live@kaalnetro.com : Bertemu : কালনেত্র
  2. info@www.kaalnetro.com : দৈনিক কালনেত্র :
সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৪৫ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
হবিগঞ্জে নবাগত পুলিশ সুপার ইয়াছমিন খাতুনের যোগদান চুনারুঘাট প্রেসক্লাবে মিথ্যাচারের অভিযোগে সাংবাদিক সম্মেলন মাধবপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় স্কুলছাত্রের মৃত্যু লাখাইয়ে ২০-২৫ জন প্রতিবন্ধী ভাতা বঞ্চিত হওয়ার ঝুঁকিতে হবিগঞ্জে বিজিবির হাতে ভারতীয় ইস্কফ সিরাপসহ এক জন আটক লাখাইয়ে নির্মাণের ২ মাসেই বেহাল, পাকা রাস্তা এখন জনদুর্ভোগের প্রতীক  স্কুলে অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা! প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত দাবি অনলাইন জুয়ায় আসক্তি: ফায়ার সার্ভিস কর্মীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার  লাখাইয়ে কাইঞ্জা বিলে ইজারাদারের নৌকায় আগুন ও হামলা আহত ৬ মিরাশিতে বসতবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় প্রতিবাদ সমাবেশ

শুক্রবারের আমল

দৈনিক কালনেত্র
  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

 

ফেরদৌস ফয়সাল: ‘জুমা’ শব্দটি ‘জমা’ শব্দ থেকে এসেছে। এর অর্থ একত্র হওয়া বা একত্র করা।

কোরআন মজিদে সুরা জুমা নামে একটি সুরা রয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘হে বিশ্বাসীগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের জন্য আজান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহকে মনে রেখে তাড়াতাড়ি করবে ও বেচাকেনা বন্ধ রাখবে। এই তোমাদের জন্য ভালো, যদি তোমরা বোঝো। নামাজ শেষ হলে তোমরা বাইরে ছড়িয়ে পড়বে ও আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করবে এবং আল্লাহকে বেশি করে ডাকবে, যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সুরা জুমা, আয়াত: ৯-১০)।

জুমার তাৎপর্য
তাফসিরবিদেরা বলেন, সুরা জুমার আগের সুরার নাম হলো সুরা ‘সফ’। সফ অর্থ কাতার বা সারি। জুমার নামাজ সারিবদ্ধভাবে আদায় করা হয়। এতে ঐক্য ও শৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়, এতে এই ইঙ্গিত রয়েছে।

সুরা জুমার পরের সুরা হলো মুনাফিকুন। এই সুরায় ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে জুমার নামাজ না পড়া কপটতার লক্ষণ। জুমার নামাজে প্রথম রাকাতে সুরা জুমার ও দ্বিতীয় রাকাতে সুরা মুনাফিকুন পড়া সুন্নত। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি বিনা কারণে জুমা পরিত্যাগ করল, তাকে মুনাফিক হিসেবে তালিকাভুক্ত ও লিপিবদ্ধ করা হয়।’ (মিশকাত)।

হজরত উমর (রা.) ও হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, ‘আমরা শুনেছি রাসুলুল্লাহ (সা.) মিম্বারে দাঁড়িয়ে বলেছেন, যারা কয়েকটি জুমা ধারাবাহিকভাবে পরিত্যাগ করবে, আল্লাহ তাদের অন্তরে সিলমোহর করে দেবেন। এরপর তারা গাফিলদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।’ (মুসলিম)।

হজরত আবু জাআদ (রা.) বর্ণনা করেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি অবজ্ঞা বা অবহেলা করে তিন জুমার পরিত্যাগ করল, আল্লাহ তার অন্তরে সিলমোহর করে দেবেন।’ (তিরমিজি)।

মসজিদে নীরবতা
হজরত মুআজ ইবনে আনাস জুহানি (রা.) বর্ণনা করেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি জুমার জামাতে মানুষের ঘাড়ের ওপর দিয়ে সামনে যাওয়ার চেষ্টা করল, কিয়ামতের দিন তাকে জাহান্নামের পুল বানানো হবে।’ (তিরমিজি)।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, জুমার দিনে ইমামের খুতবা দেওয়ার সময় যে কথা বলল, সে যেন গাধার মতো বোঝা ওঠায়। যে তাকে বলল চুপ করো, তারও জুমা নেই।’ (আহমাদ)।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, জুমার দিনে ইমাম খুতবা দেওয়ার সময় যখন তুমি তোমার ভাইকে বললে, চুপ করো; তখন তুমিও অনর্থক কথা বললে।’ (বুখারি)।

জুমার গুরুত্ব
হজরত তারেক ইবনে শিহাব (রা.) বর্ণনা করেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, জুমার জামাতের সঙ্গে আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ফরজ কর্তব্য; চার প্রকার লোক ছাড়া। ক্রীতদাস, নারী, শিশু ও অসুস্থ ব্যক্তি।’ (আবু দাউদ)।

হজরত সালমান (রা.) বর্ণনা করেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, জুমার দিনে যে গোসল করল, সাধ্যমতো পবিত্রতা অর্জন করল, তেল ব্যবহার করল, সুগন্ধি ব্যবহার করল এবং মসজিদে গিয়ে কাউকে না ডিঙিয়ে বসল, নীরবে ইমামের খুতবা শুনল, এরপর নামাজ আদায় করল; আল্লাহ তার দুই জুমার মধ্যবর্তী গুনাহগুলো মাফ করে দেবেন।’ (বুখারি)।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিনে ভালোভাবে অজু করল, অতঃপর জুমায় এল, মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনল ও চুপচাপ থাকল, তার এক জুমার থেকে আরেক জুমার পর্যন্ত গুনাহগুলো ক্ষমা করা হবে।’ (মুসলিম)।

প্রতি কদমে সওয়াব
হজরত আউস ইবনে আউস (রা.) বর্ণনা করেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন জামাকাপড় ধুয়ে গোসল করে সকাল সকাল মসজিদে গেল, হেঁটে মসজিদে গেল, কোনো বাহনে গেল না, ইমামের কাছে বসল, মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনল, অযথা কোনো কাজ করল না, তার প্রতিটি পদক্ষেপে এক বছরের রোজা ও এক বছরের নামাজের সওয়াব প্রাপ্ত হবে।’ (তিরমিজি)।

জুমার খুতবা
জুমার অন্যতম প্রধান বিষয় হলো খুতবা বা ভাষণ। হাদিস শরিফে আছে, হজরত জাবির ইবনে সামুরা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) দুটি খুতবা দিতেন, দুই খুতবার মাঝে বসতেন; খুতবা ও নামাজ উভয়ই হতো সমান। (মুসলিম)। প্রথম যুগে জুমার নামাজের পরে খুতবা দেওয়া হতো।

একবার নবীজি (সা.) খুতবা দিচ্ছিলেন, এমন সময় বাণিজ্য কাফেলা এলে অনেকে উঠে চলে যান। ৭ জন নারীসহ ১৯ জন বসে থাকেন। এই ১৯ জনের মধ্যে বেহেশতের সুসংবাদপ্রাপ্ত ১০ জন ছিলেন। তখন সুরা জুমার শেষ আয়াত নাজিল হয়। ‘ব্যবসায়ের সুযোগ বা তামাশা দেখলে তোমাকে দাঁড় করিয়ে রেখে ওরা সেদিকে ছুটে যায়। বলো, আল্লাহর কাছে যা আছে, তা তামাশা ও ব্যবসার চেয়ে অনেক ভালো। আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ রিজিকদাতা।’ (সুরা জুমা, আয়াত: ১১)। এরপর থেকে নবীজি (সা.) খুতবা আগেই প্রদান করেন। (হাশিয়ায়ে জালালাইন ও মাআরিফুল কুরআন)।

জুমার দিনের নামাজ
জুমার মূল নামাজ দুই রাকাত। জুমার দিনে জোহর ওয়াক্তে জোহরের নামাজের পরিবর্তে দুই রাকাত জুমার নামাজ আদায় করা ফরজ। এর আগে চার রাকাত (কাবলাল জুমা) ও পরে ৪ রাকাত (বাদাল জুমা) পড়া সুন্নত। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) জুমার আগে (কাবলাল জুমার) চার রাকাত নামাজ আদায় করতেন এবং জুমার পরে (বাদাল জুমা) চার রাকাত নামাজ আদায় করতেন। (তাবরানি)।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তোমরা যখন জুমার নামাজ আদায় করবে, তারপর (বাদাল জুমা) চার রাকাত নামাজ আদায় করবে। (মুসলিম)। অজুর সঙ্গে সম্পৃক্ত দুই রাকাত (তাহিয়্যাতুল অজু) ও মসজিদে প্রবেশের সঙ্গে সম্পর্কিত দুই রাকাত (তাহিয়্যাতুল মসজিদ বা দুখুলুল মসজিদ) জুমার দিনে বেশি পড়া হয়। জুমার ফরজের শর্ত পূর্ণ হয়েছে কি না, এই সংশয়ে অনেকে চার রাকাত ওয়াক্তীয় জোহর এবং দুই রাকাত আখেরি জোহরও আদায় করেন। দুই রাকাত নফল পড়েন আবার শোকরিয়া নামাজ দুই রাকাতও পড়েন অনেকে। সালাতুত তাসবিহ চার রাকাতও কেউ কেউ পড়ে থাকেন শুক্রবারে।

দ.ক.সিআর.২৫

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© 𝐰𝐰𝐰.𝐤𝐚𝐚𝐥𝐧𝐞𝐭𝐫𝐨.𝐜𝐨𝐦
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট