1. live@kaalnetro.com : Bertemu : কালনেত্র
  2. info@www.kaalnetro.com : দৈনিক কালনেত্র :
মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ০৮:৫৫ অপরাহ্ন

সীমান্ত হত্যা বন্ধ হবে কবে? বিজিবির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন!

আসাদ ঠাকুর
  • প্রকাশিত: রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

স ম্পা দ কী য়

প্রতিবারই বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশিরা মারা গেলে আমাদের প্রতিবাদ হয়। অথচ মৃত্যুর মিছিল থামে না। এর মূল কারণগুলো নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। এসব মৃত্যুর বেশিরভাগ ঘটনা ঘটে ভারতের মাটিতে। ফলে এদের “সীমান্ত হত্যা” বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে, এটি অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের হত্যাকাণ্ড। কিন্তু প্রশ্ন ওঠে, বাংলাদেশিরা কেন সীমান্ত পেরিয়ে ওপারে যাচ্ছে?

 

এর পেছনে মূলত তিনটি কারণ রয়েছে: পারিবারিক সম্পর্ক, কাজের সন্ধান, এবং সবচেয়ে বড় কারণ চোরাচালান। চোরাচালানের এই বিশাল অর্থনীতির পৃষ্ঠপোষক ভারতীয় পুঁজি, যেখানে দরিদ্র বাংলাদেশিরা শ্রমিক বা বাহক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই গরিব মানুষগুলোই বিএসএফের গুলির প্রধান শিকার। সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ‍উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, তারা ভারত দখল করতে যায় না, বরং বাহক হিসেবে কাজ করে।

 

বিজিবির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করা যেতে পারে। কেন তারা সীমান্তে এই অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে পারছে না? তবে এটাও বুঝতে হবে যে ৪,১৫৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তে বসতভিটা, উঠান, রান্নাঘর, বিল, নদী, ধানক্ষেত এবং ঘন জঙ্গল আছে। এত বৈচিত্র্যপূর্ণ সীমান্তের প্রতি ইঞ্চি পাহারা দেয়া কঠিন। বিশ্বের দীর্ঘতম সীমান্তগুলোর একটি এটি।

 

এই সমস্যার সমাধান কী? সবচেয়ে কার্যকর সমাধান হবে সীমান্ত এলাকার মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি। চোরাচালান নির্ভর জীবিকা থেকে তাদের সরাতে হবে। বিজিবি এ ব্যাপারে প্রচারণা চালাচ্ছে, কিন্তু অর্থনৈতিকভাবে প্রান্তিক জনগণ স্বাবলম্বী না হলে এই প্রচেষ্টা সফল হবে না।

 

শিক্ষা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতে হবে। সীমান্ত এলাকায় শিক্ষার হার কম, আর এই কারণেই অনেকেই সহজে চোরাচালান চক্রের ফাঁদে পড়ে। তাই সরকার এবং এনজিওদের শিক্ষা ও কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে, যা জনগণকে চোরাচালান থেকে দূরে রাখতে সহায়তা করবে।

 

যারা আত্মীয়তার কারণে সীমান্ত পার হতে চায়, তাদের জন্য বিজিবি- বিএসএফের অনুমোদনে একটি সাময়িক পাস সিস্টেম চালু করা যেতে পারে। এর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিতভাবে সীমান্ত পারাপার সম্ভব হবে, যা অবৈধ অনুপ্রবেশ কমাবে।

 

এখানে বিজিবির ভূমিকা শুধু পতাকা বৈঠক আর লাশ ফেরানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। সীমান্ত এলাকার মানুষকে সচেতন করা, তাদের জীবনমান উন্নত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সীমান্তের নজরদারি বাড়ানোর উদ্যোগও নিয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও, কিছু বাংলাদেশি অবৈধভাবে ভারতে ঢুকে পড়ছে।

 

এখন প্রশ্ন হলো, বিএসএফ কি তাদের গুলি করে হত্যা করার অধিকার রাখে? না, রাখে না। ভারতের আইন অনুযায়ী, যারা বৈধ পাসপোর্ট বা ভিসা ছাড়া ভারতে প্রবেশ করে, তাদের আদালতে বিচার হওয়ার কথা। ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী ৫ বছরের কারাদণ্ড বা জরিমানা হতে পারে। পাসপোর্ট অ্যাক্ট অনুযায়ী তিন মাসের জেল বা জরিমানা হতে পারে। সন্ত্রাসের প্রমাণ থাকলে শাস্তি আরও কঠোর হতে পারে।

 

তাহলে বিএসএফের এই হত্যাকাণ্ডগুলো একপ্রকার বিচারবহির্ভূত হত্যা, যা ভারতের নিজস্ব আইনও অমান্য করছে। এসব হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মঞ্চে সোচ্চার হওয়া দরকার। এসব ঘটনা শুধু জীবনহানি ঘটায় না, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষতি করে, যা ভবিষ্যতে আরও সংকট ডেকে আনতে পারে।

দ.ক.সিআর-২৪

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  
© 𝐰𝐰𝐰.𝐤𝐚𝐚𝐥𝐧𝐞𝐭𝐫𝐨.𝐜𝐨𝐦
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট