1. live@kaalnetro.com : Bertemu : কালনেত্র
  2. info@www.kaalnetro.com : দৈনিক কালনেত্র :
শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ০৮:৩৯ অপরাহ্ন

অধরা আরাধ্য ইলিশ!

রতন কুমার তুরী
  • প্রকাশিত: বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ১৩২ বার পড়া হয়েছে

সুস্বাদু ইলিশের দেশ বাংলাদেশ। ইলিশের প্রজনন এবং উৎপাদন বাড়লেও তা এ দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। ভরা মৌসুমেও বাজারে ইলিশের দাম থাকে অত্যন্ত চড়া। ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছও বটে। জাতীয় মাছ হিসেবে যেখানে এ ইলিশ সহজপ্রাপ্য হয়ে সব মানুষের নাগালে থাকার কথা, সেখানে প্রতিবছর ইলিশের মৌসুমে ঘটে এর উল্টো। অনেক সময় জাতীয় মাছের দেখাই মেলে না। উচ্চবিত্ত জনগোষ্ঠীর বেশির ভাগ মানুষ ইলিশ প্রতিবছর বাজারে আসার সঙ্গে সঙ্গে কেনা শুরু করলেও মধ্যবিত্ত আর নিম্নবিত্তেরা অপেক্ষা করতে থাকেন, কখন আরাধ্য মাছটির দাম আয়ত্তের মধ্যে আসবে, আর পরিবার-পরিজন নিয়ে ইলিশের স্বাদ নেবে।

 

যেহেতু ইলিশ বাংলাদেশের জলসীমায় বেশি পাওয়া যায় এবং এর সুনামও পৃথিবীজুড়ে, সেহেতু স্বাভাবিকভাবেই ইলিশ বাংলাদেশের মানুষ পছন্দ করে বেশি। বর্তমানে  ইলিশের দাম দিন দিন যেভাবে বাড়ছে, তাতে এটি একদিন সাধারণ মানুষের সাধ্যের বাইরে চলে যাবে।

 

স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের গ্রামীণ বাজারেও মাঝারিসহ বড় আকারের ইলিশের ছড়াছড়ি ছিল।  মানুষ তখন প্রতি হাটবারে থলে ভরে ইলিশ নিয়ে যেত। একটু রাত হলেই কম দামে ইলিশ বিক্রি করতেন বিক্রেতারা। বর্তমান বাজারে বড় আকারের ইলিশ প্রায় দেখাই যায় না। থাকলেও তার দাম আকাশচুম্বী, যা উচ্চবিত্ত ছাড়া কেউ কিনতে পারে না। এখন বড় আকারের ইলিশ বেশির ভাগ বিদেশে রপ্তানি হয়। ইলিশের প্রজনন বেশি হলেও তা বাইরে রপ্তানি হওয়ার কারণে দেশের মানুষ তা দেখতে পায় না। এমনকি ইলিশের ভরা মৌসুমেও অপেক্ষাকৃত ছোট আকারের ইলিশ বাজারে চোখে পড়ে। ইলিশ উৎপাদনে শীর্ষ দেশ হয়েও যদি দেশের মানুষ ইলিশ খেতে না পারে; এর চেয়ে দুঃখজনক কিছু হতে পারে না। ইলিশের ভরা মৌসুমে ইলিশ রপ্তানি সীমিত করা উচিত।

 

প্রথমে দেশের মানুষকে ইলিশের স্বাদ নিতে দিতে হবে, তার পর আসবে বাইরে রপ্তানির চিন্তা। মূলত, দেশ-বিদেশে  ইলিশের চাহিদা প্রচুর হলেও অনেক সময় এর প্রজনন চাহিদা অনুযায়ী হয় না। ফলে দেশে ইলিশের দাম বৃদ্ধি পায়। অনেক সময় কম প্রজননের সময়েও ইলিশ রপ্তানি হওয়ায় বাজারে এর দাম বাড়ে। অনেক দাদন ব্যবসায়ী ইলিশের দাম বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। কারণ তারা ইলিশ ধরার জন্য জেলেদের যে টাকা দেয়, তা অনেকটা চড়া সুদে। এখানে চড়া সুদে জেলেরা টাকা নিয়ে ইলিশ ধরে আনলেও ইলিশ বিক্রির সময় ঠিক তত টাকা পায় না। কিন্তু আড়তদার ঠিকই বেশি দামে ইলিশ বিক্রি করে।

 

প্রকৃতপক্ষে দেশের সাধারণ মানুষের মুখে ইলিশ তুলে দিতে হলে ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে হবে ব্যাপকভাবে। এ জন্য প্রয়োজনবোধে জেলেদের সরকারি উদ্যোগে বড় অঙ্কের আর্থিক  সাহায্য করতে হবে। জেলেদের দাদন ব্যবসায়ীদের হাত থেকে বাঁচাতে হলে তাদের সরকারিভাবে পুনর্বাসন করতে হবে, যেন তাদের দাদন ব্যবসায়ীদের দ্বারস্থ হতে না হয়। মূলত ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি আর জেলেদের জীবনমানের উন্নয়নের ওপরই নির্ভর করছে বাজারে ইলিশের দাম।

 

আমরা প্রত্যাশা করব, মৎস্য বিভাগ জাতীয় মাছ ইলিশের দাম কীভাবে সাধারণ মানুষের সাধ্যের মধ্যে রাখা যায়, এ বিষয়ে চিন্তাভাবনা করবে। সেই সঙ্গে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি বিষয়ে আধুনিক কোনো পদ্ধতি থাকলে তাও ব্যবহার করবে।

দ.ক
সিআর—২৪

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  
© 𝐰𝐰𝐰.𝐤𝐚𝐚𝐥𝐧𝐞𝐭𝐫𝐨.𝐜𝐨𝐦
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট