প্রতিবেদক মহিবুর তালুকদার শিবলু, চুনারুঘাট
উৎপত্তি সেন্ট্রাল আমেরিকায় হলেও বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন ফলের সর্বাধিক চাষ হয় ভিয়েতনাম ও চায়নায়। ভিয়েতনামের সাথে বাংলাদেশের মাটি ও জলবায়ুর সাদৃশ্যের কারণে দিন দিন বাংলাদেশেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ড্রাগন চাষ।
এরি ধারাবাহিকতায় চুনারুঘাটে ড্রাগন চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন গাজীপুর ইউনিয়নের সৌদি প্রবাসি মোঃ জহুর হোসেন। আর এতে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন প্রতিবেশীরাও। এবং চাষাবাদের আধুনিক পদ্ধতি ও পরিচর্যাসহ সার্বক্ষনিক পরামর্শ প্রদান করছেন উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর ও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
জানা গেছে- চুনারুঘাট উপজেলার পাহাড়ি এলাকায় চার বছর আগে ৫২ লাখ টাকা ব্যয়ে ২শত ৫২ শতক জায়গায় ড্রাগন বাগান গড়ে তুলেন প্রবাসী জহুর হোসেন। রোপন করা হয় প্রায় সাড়ে ৭ হাজার ২শত ড্রাগন ফলের চারা। বর্তমানে প্রতিটি চারার মধ্যেই এখন ঝুলছে ড্রাগন ফল। এ বাগানের উৎপাদিত ড্রাগন ফল জেলার চাহিদা মিটিয়ে এখন পাঠানো হচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে চলতি মৌসুমে বড় ধরণের লাভের আশা করা হচ্ছে। স্থানীয়রা বলছেন এমন উদ্যোগে জহুর হোসেন নিজেও যেমন উপকৃত হবে সাথে এলাকাবাসীও। তাকে দেখে অনেকেই এখন ড্রাগন ফল চাষে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়- চুনারুঘাট উপজেলার মানিকভান্ডারস্থ এলাকায় সারি সারিভাবে লাগানো ড্রাগন ফলের চারা। আর এসব চারায় ঝুলে আছে পাকা আধা পাকা সব ড্রাগন ফল। ২০২১ সালে ড্রাগন বাগানটি গড়ে তোলার পর থেকে দিনরাত বাগানে শ্রম দিচ্ছেন জহুর হোসেনের পরিবারের সদস্যরা। একই সঙ্গে বাগানের পরিচর্যায় কাজ করছেন ৫ জন শ্রমিক। কেউ কেউ বাগানে আগাছা পরিস্কার করছেন আবার কেউ ড্রাগন ফল তোলায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। বর্তমানে এ বাগানের উৎপাদিত বিষমুক্ত ড্রাগন ফলের চাহিদা ছড়িয়ে পরছে জেলাজুড়ে। স্থানীয়রা বলছেন- প্রবাসি জহুর হোসেনের এমন ড্রাগন বাগান এলাকার সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। সে এখন সকলের অনুপ্রেরণার মাধ্যম। তার এমন সাফল্য দেখে গ্রামের অনেক বেকার যুবকরা ড্রাগন ফল চাষ করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা বলেন- এমনিতেই ড্রাগন ফলের সাথে আমাদের এলাকার মানুষ এতটা পরিচিত না। কিন্তু এখন নিজ এলাকায় এই ফলের এমন বাম্পার ফলনে এটা চাষে আগ্রহ বাড়ছে সকলের। জহুর হোসেনের বাগানে ড্রাগন ছাড়াও অন্যান্য আরো ফলমুল চাষ করা হচ্ছে। জহুর হোসেনের ড্রাগন বাগানের ম্যানেজার আব্দুল আহাদ জানান- আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এ বছর উৎপাদন হবে ২৫ থেকে ৩০ টন ড্রাগন ফল। তাই বাগানটিকে আরো এগিয়ে নিতে সরকারি সহযোগিতার দাবি জানান তিনি।
হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আক্তারুজ্জামান বলেন- জহুর হোসেনের ড্রাগন বাগানে সেচ সুবিধার জন্য সৌরচালিত সেচ ব্যবস্থা প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি এ ধরণের বাগান তৈরিতে লোকজনকে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
দ.ক.সিআর.২৫