1. live@kaalnetro.com : Bertemu : কালনেত্র
  2. info@www.kaalnetro.com : দৈনিক কালনেত্র :
শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ১২:১৮ পূর্বাহ্ন

শিশু কেন পড়তে বসতে চায় না?

দৈনিক কালনেত্র
  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৮ জুলাই, ২০২৫

কালনেত্র ডেস্ক: খেয়াল করে দেখবেন শিশু ছোট থেকে আপনাকে অনুকরণ করে বেড়ে উঠছে৷ পরিবারে বাবা মা যা করে, শিশু তাই শেখে। আপনি যে সময়ে শিশুকে পড়তে বসতে বলেন, সেই সময়ে আপনি পড়তে বসেন?

নাকি টিভি দ্যাখেন, ফোন টেপেন, রিলস দ্যাখেন। আপনি যদি পড়তে না বসেন, তাহলে কিভাবে আশা করেন শিশু পড়তে বসবে? এখন আপনি বলতে পারেন- এই বয়সে কী পড়াশোনা করবো? সংসারে কত কাজ!

একটু চেষ্টা করলেই দেখবেন কাজ থেকে সময় বের হয়ে গেছে৷ তখন বই নিয়ে বসুন৷ আপনার পছন্দের ফিকশন বই, বা নন ফিকশন বই৷ গল্প, উপন্যাস, কবিতা, ধর্মীয়, থ্রিলার, অ্যাডভেঞ্চার, আপনার যা প্রিয়, তাই পড়ুন৷ শিশুর পাশে বসে আপনি চুপচাপ পড়ুন। দেখবেন শিশুও পড়তে আগ্রহী হবে৷

শিশুকে সব সময় একাডেমিক বই পড়ার কথা বলতে হবে, তা না৷ রঙ বেরঙের ছবিওয়ালা রূপকথার বই, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর বই, অ্যাডভেঞ্চারাস বই দিন।
অনেকে ভাবে, এগুলো আউট বই, বাজে বই৷ এসব দেয়া যাবে না, শুধু স্কুলের পড়ার নোট গাইড দিতে হবে। এটাই হলো আপনার স্মরণকালের সেরা ভুল সিদ্ধান্ত৷ শিশুকে কখনো নোট গাইড দেয়া যাবে না, যাবে না, যাবে না। যদি গাইড কিনে দেন, শিশুর মেধার বিকাশ আপনি নিজে হাতে ধ্বংস করলেন।
সে পাঠ্যবইয়ের অনুশীলনীর সমাধান নিজে ভেবেচিন্তে করবে, প্রশ্নের উত্তর নিজে চিন্তাভাবনা করে লিখবে৷ গাইডে যে সাজানো গোছানো উত্তর লেখা থাকে, ওটাই যদি শিশু মুখস্থ করে, তাহলে তার আর চিন্তা ভাবনা করার, ব্রেইন খাটানোর আগ্রহ থাকবে না৷ সে একটা পঙ্গু অথর্ব মস্তিষ্ক নিয়ে বেড়ে উঠবে৷

সে যদি অ্যাডভেঞ্চারাস বা থ্রিলার বই পড়ে, সে মজা নিয়েই পড়বে, ডিটেকটিভ বই পড়ে নানা ধরণের সমস্যা সমাধানের বিষয়ে জানবে৷ তার ব্রেইন দারুণ শার্প হবে৷ তখন সে সহজেই পাঠ্যবইয়ের প্রশ্নের সমাধান বের করতে পারবে ভিন্ন আঙ্গিকে৷ কারণ তার জানাশোনার লেভেল অন্য দশজনের চেয়ে ওপরে।
আউট বই পড়ার ফলে শিশুর জ্ঞানের ভান্ডার খুব সমৃদ্ধ হবে৷ সে আপনার আশেপাশের সমস্যা এমন চৌকশভাবে সমাধান করে ফেলবে, আপনি ভাববেন এটা অলৌকিক ব্যাপার৷ আসলে অলৌকিক বা গায়েবি ব্যাপার না৷ শিশু বই থেকে প্রাপ্ত জ্ঞানের সাথে নিজস্ব চিন্তাধারা মিশিয়ে প্রয়োগ ঘটিয়েছে মাত্র।
শিশুকে পড়া শুরুর আগে সুডোকু মেলাতে দিন, শব্দ ছক খেলতে দিন৷ এতে তার মস্তিস্ক কী পরিমাণ কার্যকরী হবে, চিন্তাও করতে পারবেন না আপনি।

প্রতিদিনের দৈনিক পত্রিকায় আপনি সুডোকু খেলা পাবেন, শব্দ খেলা পাবেন। ওখান থেকেই শিশুকে খেলতে দিন৷ শিশুর খাতায় ছক এঁকে দিন৷ তারপর পেন্সিল দিয়ে খেলতে বলুন৷ কারণ প্রচুর ভুল হবে, মুছতে হবে।

ধরা যাক, তার একটা সুডোকু মেলাতে এক ঘন্টা সময় লাগলো৷ অথবা শেষমেষ মেলাতে পারলো না৷ কোনো সমস্যা নাই। এই এক ঘন্টা তার মস্তিস্কে যে ঝড় চলেছে, এতে সে দারুণ কর্মক্ষম হয়েছে৷

সুডোকু বা শব্দছক খেলা আপনিও খেলুন। প্রতিদিন প্রথম আলো বা ইত্তেফাক পত্রিকায় এসব খেলা খেলতে দেয়া হয়৷ সঠিক উত্তর পাঠাতে পারলে পুরস্কারও দেয়৷ আপনার মস্তিস্কও শার্প করার দরকার আছে৷ অনবরত ফেসবুকে রিলস দেখে দেখে মস্তিস্কে যে আবর্জনা জমাচ্ছেন, সেই আবর্জনা দূর করে মস্তিষ্ককে কর্মক্ষম করতে হলে এসব খেলা খেলতে হবে।
পড়া শুরু করার আগে এভাবে ব্রেইনটা পরিষ্কার করে নিন৷ দেখবেন মনোযোগ এসে গেছে৷ শিশু যখন পড়বে, কোনো শব্দের অর্থ না বুঝলে আপনি সুন্দরভাবে তাকে অর্থ বোঝাবেন৷ উদাহরণ দিয়ে বোঝাবেন৷ আপনার জানা না থাকলে আপনি শিখবেন নেটে সার্চ দিয়ে৷ তারপর আপনার মতো সহজ করে শিশুকে বোঝাবেন৷ তবে খবরদার, শিশুর হাতে নোট গাইড দেবেন না।

অনেকে বলতে পারেন- আমার সন্তান নোট গাইড মুখস্থ করে পরীক্ষায় এ প্লাস পেয়েছে৷ সুতরাং সমস্যা নাই৷ আপনাকে বলছি- আপনি যদি মুখস্থবিদ্যা ঝেড়ে পরীক্ষায় এ প্লাস পাওয়া আর প্রকৃত অর্থে মেধাবী হওয়াকে এক জিনিস ভাবেন, আপনাকে আমার কিছুই বলার নাই৷

একটা সার্টিফিকেট পাবে আপনার সন্তান। তবে ওই সার্টিফিকেটের কোনো মূল্য নাই। সার্টিফিকেট ধুয়ে পানি খেতে হবে৷ বর্তমান যুগে চারিদিকের জ্ঞান অর্জন এবং প্রয়োগের দক্ষতা থাকার প্রয়োজন আছে৷ সেটা করতে হলে প্রচুর আউট বই, পত্রিকা, আর্টিকেল পড়ার কোনো বিকল্প নেই। সুতরাং শিশুর পড়ার আগ্রহ বাড়াতে হলে গল্পের বই দিতে হবে আগে৷ কাঠখোট্টা একাডেমিক বই না৷

কাজের মধ্যেও সময় বের করে আপনি পড়তে বসুন৷ দেখবেন শিশুকে বসতে বলা লাগছে না৷ নিজ উদ্যোগেই বই নিয়ে বসে গেছে।

লেখা- Paint Ashraf

দ.ক.সিআর.২৫

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  
© 𝐰𝐰𝐰.𝐤𝐚𝐚𝐥𝐧𝐞𝐭𝐫𝐨.𝐜𝐨𝐦
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট