➖
সম্পাদকীয়◾
বাংলাদেশের আনন্দ কোলাহলপ্রিয় মানুষের ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে এখন আর কোলাহল ও আনন্দ নেই। ব্যক্তিগত জীবন অনেকটাই সঙ্কুচিত হয়ে গেছে, সামাজিক জীবনও ছোট হয়ে গেছে। জনসমাগমও আর আগের মতো নেই। শপিং মল ও রেস্তোরাঁগুলো প্রায় খালি। কেনাকাটা নেই বললেই চলে, ব্যবসায়ীদের কপালেও ভাঁজ পড়েছে। আমাদের রফতানির বড় অংশ তৈরি পোশাক খাতের বেশিরভাগ ক্রেতা আর বাংলাদেশে আসতে চাচ্ছেনা। অনেক দেশী ও বিদেশী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশকে পরিবারহীন কর্মস্থল হিসেবে ঘোষণা করেছে। অনেকেই ইতোমধ্যে পরিবার সরিয়ে নিয়েছেন। অনেক বড় বড় আন্তর্জাতিক সম্মেলনও ঢাকা থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে- যার মধ্যে ব্যবসা সম্পর্কিত সম্মেলনও ছিল। এমনিতেই শেয়ার মার্কেট লুট, ব্যাংকিংখাতে অব্যবস্থাপনা ‘পুকুর চুরি নয়, সাগর চুরি’র মতো মহা লুটপাটের ফলে দেশের আর্থিক খাতের শৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়েছে। তৈরি হয়েছে এক বিরাট অনিশ্চয়তা। তারউপর সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও জঙ্গিবাদের মহা আতঙ্ক ও বিপদের ফলে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে। শুধু তাই নয়, দেশের ভবিষ্যৎ কোন পথে তা নির্ণয়ে সচেতন মহলসহ সর্বসাধারণের মনে এক অজানা শঙ্কা বিরাজ করছে।
প্রিয় দেশবাসী, আমাদের সকলের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশকে অজানা গন্তব্যের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে, তাই এই মুহূর্তে প্রয়োজন সর্বাত্মক জাতীয় ঐক্যের। এই দায়িত্ব প্রধানতঃ সরকারের। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, দেশের মানুষের মধ্যে তীব্র উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। অন্যদিকে বিরোধীদলগুলোকে দোষারোপের রাজনীতি ও ইতিহাসের জঘন্যতম দমনপীড়ন থেকে দেশের মানুষ মুক্তি চায়।
তাই আসুন, দেশ ও জাতি যখন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে, তখন আর কোন বিভক্তি বা বিভাজন নয়, বরং সকল রাজনৈতিক দল, শ্রেণি পেশার লোককে নিয়ে দেশপ্রেমের চেতনায় বলীয়ান হয়ে জাতীয় ঐক্য গঠন করে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করি। গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন ও পরমতসহিষ্ণুতার চর্চাকে আরো বিকশিত করে বাংলাদেশের মানুষের মিলেমিশে থাকার চিরায়ত ঐতিহ্যকে আবার নতুনভাবে ফিরিয়ে নিয়ে আসি। সবাই মিলে মিশে দেশে ভ্রাতৃত্বসুলভ অটুট জাতীয় ঐক্য, অর্থনৈতিক উন্নতি এবং সন্ত্রাসমুক্ত শান্তি ও নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টিতে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করি।
আসাদ ঠাকুর
কবি, লেখক ও সাংবাদিক
দ.ক.সিআর.২৪