➖
গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময় কেমন যাচ্ছে – এই প্রশ্ন আজ সবার মাঝে ঘুরপাক খাচ্ছে। এর উত্তরে যাওয়ার আগে কিছু কথা বলে নেয়া আবশ্যক। ৫২-এর ভাষা আন্দোলন থেকে ‘৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত মানুষের মধ্যে যে আকাঙ্ক্ষা বিরাজ করতো তা গণতন্ত্র, অসাম্প্রদায়িকতা অর্থাৎ ধর্মান্ধতা থেকে পরিত্রাণ, সুস্থ জাতীয় বিকাশ যার গতি সারা দুনিয়ার দিকে এবং শোষণহীন একটি মানবিক সমাজের প্রতিষ্ঠা। স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ ও তার মূল নেতৃত্ব প্রকৃত অর্থে সে পথে হাঁটতে পারেনি বা হাঁটেনি। গত ৫৩ বছরে আমরা আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামাত এই চার পার্টিকে শাসক দল হিসেবে দেখেছি। এরা রক্ত দিয়ে অর্জিত আমাদের গণতান্ত্রিক দাবিকে বাস্তবে রূপ দিতে পারেনি বা ইচ্ছে করে দেয়নি। সে আলোচনা দীর্ঘ, তা অন্যত্র করা যাবে। তবে তাদের প্রত্যেকের শাসনামলে একটা বিষয় কমন দেখা গেছে, সেটা হচ্ছে অবাধ লুটপাট। তাদের আমলে প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি, কারণ লুটপাট ও গণতন্ত্র একসাথে যায় না। বরঞ্চ ধ্বংস হয়েছে সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, মানবিক রাষ্ট্র নির্মাণে যেগুলোর ভূমিকা সর্বাধিক। তবে মানুষের আকাঙ্ক্ষার পৃষ্ঠে লড়াই থেমে যায়নি। ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার পতন ও তার সাঙ্গপাঙ্গসহ পলায়ন এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
এ লড়াইয়ে হাজারের উপরে মানুষ জীবন দিয়েছে পঙ্গুত্ব বরণ করেছে হাজার হাজার মানুষ। সবারই একই দাবি, মুক্তির দাবি। মানুষ সকল প্রকার শোষণ-নিপীড়ন থেকে মুক্তি চায়। এই লড়াইয়ে অংশ নিয়েছে ছাত্র-শ্রমিক-কৃষক সহ সব শ্রেণিপেশার মানুষ। মানুষের লড়াই চলতে চলতে এমন রূপ নিয়েছে।
তবে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী অবস্থা যেরূপ কাঠামোগত দানা বেঁধে ওঠার কথা, সেরকম দেখা যাচ্ছে না। অভ্যুত্থানের স্পিরিটের সাথে প্রতিষ্ঠিত সরকারের চেহারার পার্থক্য দেখা যায়। যারা জীবন বাজি রেখে রাস্তায় টিকে থেকেছিলেন তাদের আকাঙ্ক্ষার সাথে সরকারে স্থান পাওয়া স্বনামধন্য লোকদের কোথায় যেনো একটা অমিল পরিলক্ষিত হয়। দুএকজন বাদে লড়াইয়ের মাঠে তাদের কাউকে দেখা যায়নি। যে রাজনৈতিক দলটিকে হঠিয়ে তারা ক্ষমতা নিলেন, সেই দল ও তার নেতা শেখ হাসিনা বিগত পনেরো বছর ধরে ফ্যাসিবাদের সব শর্ত পূরণ করে চলেছিলেন। পুলিশ, বেসামরিক প্রশাসন, আমলাতন্ত্র সব জায়গায় তার লোকজন ঢুকিয়েছিলেন। সামরিক বাহিনী ও নির্বাচন কমিশনকে হাতে নিয়েছিলেন। এমন কি সিভিল সোসাইটি যেমন কবি, লেখক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী তাদেরকেও করায়ত্ত করেছিলেন। তারা উগ্রবাদ প্রচারেরর ক্ষেত্রে, প্রপাগান্ডা প্রচারেরর ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখেছিলেন। শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধকে ব্যবহার করে, কথায় কথায় রাজাকার শব্দটি প্রয়োগ করে একটি কর্দমাক্ত পরিবেশের জন্ম দিয়েছিলেন। বর্তমান সরকারটি এই পরিবেশের বিপরীতে কাজ করবেন কিনা এই প্রশ্ন সামনে আসে। আমরা জানি ৬টি কমিশন গঠিত হয়েছে। যাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তারা তিন যুগের বেশি সময় ধরে বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করে আসছেন। তাদের তিন মাসের সময় দিতে হয় না। তারা ইচ্ছে করলে তিন সপ্তাহের মধ্যেই সমাধান দিতে সক্ষম। ছাত্র-জনতা-শ্রমিক-কৃষক জনতা মুখিয়ে আছে একটি অবাধ নির্বাচনে ভোট দিতে কারণ তারা সুদীর্ঘ সময় ধরে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারছেন না। সুতরাং সরকারকে তার কাজের প্রাধান্য বিবেচনায় নিয়ে এগুতে হবে। এই জায়গাটা সরকারের কাছে স্পষ্ট না। মনে রাখতে হবে পতিত স্বৈরাচারের কিছু লোক হয়তো পালিয়ে গেছেন কিন্তু তাদের বিস্তৃত নেটওয়ার্ক এখনো সক্রিয়।
অন্তর্বর্তী সরকারকে বলা হচ্ছে বিপ্লবী সরকার। এখানেই গলদ। প্রকৃত অর্থে এটা কোনো বিপ্লবী সরকার না। এটা ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত একটি সরকার। এই সরকার প্রচলিত সংবিধান অনুসারে শপথ নিয়েছে। শপথ নিয়েছে স্বৈরাচারের বিশেষ উদ্দেশ্যে বানানো রাষ্ট্রপতির নিকট থেকে। বর্তমান সরকারের কর্মপন্থার দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে পতিত স্বৈরাচারের বিশেষ সহচর জাতীয় পার্টিকে তারা চায়ের দাওয়াতে আনেন যা আসলে পুনর্বাসন। এই সরকারের বৃহৎ অংশ এনজিও থেকে এসেছে। বাংলাদেশে এনজিও-র কাজ হচ্ছে মানুষকে ঋণের জালে জড়ানো। এই সরকারেরর অধিক আগ্রহ দেশকে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের ঋণের জালে জড়াতে। তবে সরকারকে ভারতের দাদাগিরি নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে দেখা গেছে। জানা গেছে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা হয়েছে মোদি-বাইডেনের মধ্যে। আলোচনা হয়েছে ইউনুস-বাইডেনের মধ্যে। এই বিষয়গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের মানুষকে এখন অধিকতর সচেতন হতে হবে। কারণ তাদের আন্দোলন বার বার বেহাত হয়ে যায়।
এখন ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বে থাকা আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা উঠেছে। আওয়ামী লীগ মানুষের অধিকার হরণকারী দল, দলটি বহু মানুষকে গুম করেছে, হাজার সংগ্রামী জনতাকে হত্যা করেছে। দলটি অর্থ পাচারের সাথে জড়িত। লুটপাটের সাথে জড়িত। দলটি রাষ্ট্রের মূল্যবান সব প্রতিষ্ঠাকে ধ্বংস করেছে। দলটির শাস্তি হতে হবে। এই দাবির সাথে দেশের বিবেকমান মানুষ একমত পোষণ করছে। অন্যদিকে জামাত বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলো। সন্ত্রাস, নৈরাজ্য এই দলের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। আবার দলটি রূপ বদলাতেও পারদর্শী। তারা আওয়ামী লীগকে মাফ করে দিয়েছে। দুদলের মধ্যে অনেক ফারাক থাকলেও মানবতা বিরোধী অপরাধের ক্ষেত্রে এক। দেখা যায় জামাত সময়ে নিজ রূপেই ফিরে আসে। বাইডেন সাহেবরা তাদের মডারেট উপাধিতে ভূষিত করেছেন। দলটি অবশ্য তার অতীত কৃতকর্মের জন্য জাতির কাছে দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চায়নি। এ ব্যাপারে এখন জামাত আলোচনায় আসছে না। বর্তমান সরকারের মুখে কুলুপ আঁটা। বরঞ্চ তাদের সাথে জামাতের দহরমমহরম বেড়েছে।
৫ আগস্টের পরিবর্তনকে মানুষ স্বাগত জানিয়েছিলো, এখনো জানাচ্ছে। এখন পর্যন্ত মানুষের লড়াই পুরোটা বেহাত হয়ে যায়নি। যা হচ্ছে সময়মতো সিদ্ধান্ত গৃহীত হচ্ছে না। ৪৫ দিনে হয়তো পনেরো বছরের অনিয়ম বা ৫৩ বছরের জঞ্জাল সাফ করা যাবে না। তবে উদ্যোগ নেয়াতো সম্ভব যেখানে ধীরগতি দেখা যাচ্ছে। এখন সরকারকে সবাই সহযোগিতা করতে রাজি আছে। বড় দল বিএনপি, ইসলামিক দলগুলো এবং বাম দলগুলো সরকারের সার্থকতা দেখতে চায়। সংস্কারের জন্য তারা যৌক্তিক সময় দিতেও প্রস্তুত। এক জটিল পরিবেশে মানুষ সরকারের সময়মতো উদ্যোগ দেখতে চায়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের আইনের সংশোধনী সংক্রান্ত আলোচনা সভা হয়েছে যেখানে তিনজন উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন। মানবতা বিরোধী অপরাধের জন্য কোনো দলকে দশ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করার বিধান প্রস্তাব করা হয়েছে। অতীতে মানবতা বিরোধী অরাধের জন্য জামাতের নেতাদের বিচার হয়েছে। কিন্তু দলটি অপরাধী কিনা সে সিদ্ধান্ত নিতে সময় ক্ষেপন করা হয়েছে। এখানে একটি বিষয় কাজ করেছে, সাম্রাজ্যবাদ এবং দেশীয় লুটেরারা মৌলবাদকে সমাজ থেকে মুছে ফেলতে চায় না, কারণ এরা তাদের লুটপাটকে আড়াল করতে সহায়ক। আমাদেরকে একটা জিনিস মনে রাখতে হবে মুক্তির লড়াইয়ে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক শত্রুর সাথে লড়েই বিজয় ছিনিয়ে আনতে হবে।
বিগত সরকারের আমলে সংঘটিত গণহত্যা, গুম ইত্যাদি মানবতাবিরোধী অপরাধে অনেকেই অংশ নিয়েছিলো। তাদের কাউকে কাউকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা যেমন, সালমান এফ রহমান, আনিসুল হক পুলিশের প্রাক্তন আইজিপি প্রমুখরা বলছেন তারা নির্দেশিত হয়ে এ কাজ করেছেন। আঙ্গুল তোলা হচ্ছে শেখ হাসিনার দিকে। কিন্তু তারা এই অপরাধের শাস্তি থেকে খারিজ হতে পারেন না। জাতি সবার বিচার দেখতে চায়। এর দায় সংগঠনের উপরও বর্তায়। ছাত্র লীগ, যুব লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সশস্ত্র বাহিনীগুলোর মানবতাবিরোধী অপরাধ রাজাকারের অপরাধের মতোই, শুধু প্রেক্ষাপট আলাদা। এদেরও বিচার হতে হবে, অন্যতায় অভ্যুত্থানের চেতনা ভূলুণ্ঠিত হবে। এই বিচার সম্ভব, কারণ ফুটেজ রয়েছে, প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত ব্যক্তিরা রয়েছেন। নির্দেশপ্রাপ্তদের ধরা হচ্ছে। তারাও প্রমাণ করবেন কে নির্দেশ দিয়েছিলো। প্রতিটা হত্যা, পঙ্গুত্ব ও গুমের বিচার হতে হবে। এতো অল্প সময়ে হাজারেরও উপরে হত্যাকাণ্ড জঘন্য মানবতাবিরোধী অপরাধ।
গ্রেফতার ব্যাপারেও কথা এসে যায়। দেখা যাচ্ছে বিগত স্বৈরাচারী সরকারের আমলের মতোই গণহারে গ্রেফতার হচ্ছে। এটা কাম্য নয়। সুনির্দিষ্ট অপরাধের ভিত্তিতে গ্রেফতার করতে হবে। গ্রেফতারের নামে হয়রানি কাম্য নয়। গণ-অভ্যুত্থানের সরকারের আমলে গায়েবি মামলার মতো মামলা হতে পারে না। মিডিয়ার লোকেরা হতে পারে সাংবাদিকতা বিষয়ে অপরাধী, কিন্তু তাদের খুনের মামলায় জড়িত করা হবে কেনো? তবে তারা যে খুনের সাথে জড়িত থাকতে পারে না এমনটা নয়, থাকলে প্রমাণসহ মামলা দেয়া যেতে পারে। অর্থাৎ যে, যে অপরাধ করেছে তার বিরুদ্ধে সেই মামলা দেয়া হোক, জনগণ সেটাই চায়। আবার অভিযুক্তকে সকল আইনগত সুযোগ দিতে হবে – এটা তার মানবাধিকার। এই কথাটা সত্যি ফ্যাসিবাদী শক্তির বিকাশে এবং এর অস্তিত্ব রক্ষায় বিরাট ভূমিকা রয়েছে মিডিয়ার। সেইসব মিডিয়াকর্মী অবশ্য অপরাধী। মিডিয়ার যেসব লোক ফ্যাসিবাদের সমালোচনায় সাহসী ছিলো আজকে তারা বর্তমান সরকারের ত্রুটি নিয়ে সমালোচনায় মুখর। মিডিয়ার কাজই হচ্ছে শাসকদের সমালোচনা করা জনগণের স্বার্থে। যে শিল্পীরা বলেছিলেন আন্দোলনকারীদের উপরে গরম পানি ঢেলে দিতে, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। যে সংস্কৃতি কর্মীরা ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর গণভবনে চা পান করতে গিয়ে অট্টহাসিতে ভেঙ্গে পড়েছিলেন তারা খাঁটি সংস্কৃতিকর্মী নন, কারণ তারা একটি বিনাভোটের অবৈধ সরকারকে বৈধতা দিতে গিয়েছিলেন। সেটা সাংস্কৃতিক কর্ম নয়। তারাও অপরাধী। কাজেই প্রত্যেকের অপরাধ বিবেচনায় নিয়ে গ্রেফতার করতে হবে। এগুলো পুলিশের ট্রেডিশনাল মামলায় পড়বে না। প্রত্যেক ব্যক্তিকে আইন যতোটুকু সুযোগ দেয় তা ভোগ করতে দিতে হবে। বেশিদিন আটকে রাখার মানসে খুনের মামলা দিতে হবে এটা ঠিক নয়। একজনকে বিনা বিচারে বছরের পর বছর আয়নাঘরে আটকে রাখার সুযোগ নেই। প্রতিশোধ নয়, আইনের ভিত্তিতে বিচারে যেতে হবে।
পাহাড়ে গণ্ডগোল। গণ্ডগোল এমনিতে হচ্ছে না, নিশ্চয়ই এর পেছনে কারণ আছে কেবল কারো উসকানিতে হচ্ছে না। কারণ খুঁজে সমাধানে যেতে হবে। মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন আমরা সবাই মিলে বাংলাদেশের মানুষ এবং আমরা এক। সুতরাং পাহাড়ের সমস্যার মূলে গিয়ে সমাধান করতে হবে। এখানে বল প্রয়োগ সুফল দেবে না বলেই বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
আশুলিয়া, গাজীপুরের গার্মেন্ট কারখানাগুলোতে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। শ্রমিকদের ন্যায্য দাবিগুলো বিবেচনায় নিয়ে মীমাংসায় যেতে হবে। চা শ্রমিক আন্দোলন ন্যায্যতা পায়নি, পোশাক শ্রমিক আন্দোলনও ন্যায্যতা পাচ্ছে না। মালিকরা শ্রমিকদের বেতন বাড়াতে চায় না, সে নানা অযুহাতে। তারা শুধু তাদের লাভটা দেখে শ্রমিকদের জীবনের কষ্টটা দেখে না। সব ব্যাপারে সবাইকে ভাবতে হবে। ন্যায্যতাকে মেনে নিয়ে মীমাংসায় আসতে হবে, শুধু উসকানিতত্ত্ব আওড়ালে হবে না। সরকারকে শ্রমিকদের ট্রেডইউনিয়ন অধিকার দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে আইএলও সনদ অনুযায়ী। সরকারকে মানুষ কাজে দেখতে চায়। এই মালিকরা প্রণোদনা পেয়েছে – শ্রমিকরা পায়নি। এই মালিকরা পণ্য রপ্তানি করে অর্থ বিদেশে রেখে আসে। কিন্তু শ্রমিকদের এরকম অপরাধ নেই, তারা শুধু মার খায় সবক্ষেত্রে। তাদের বেতন বকেয়া থাকছে, এটা মেনে নেয়া যায় না, দেশটা শুধু শোষকদের না। শোষিতের সংখ্যাই বেশি। সব শোষিতদের আজ সংগঠিত হওয়ার সময় এসেছে।
এই হছে মোটাদাগে অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ের পরিস্থিতি। এখান থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। বারবার ডিম পাড়বে হাঁসে আর খেয়ে যাবে বাগডাশে সেটা হতে পারে না। সাম্রাজ্যবাদ ও আমাদের প্রতিবেশী বাংলাদেশ নিয়ে খেলছে। আমরা কারো খেলার সামগ্রী হতে পারি না। সেজন্য সংগঠিত হতে হবে আমাদের শ্রমিকদের, কৃষকদের, ছাত্রদের, মহিলাদের, সংস্কৃতিকর্মীদের এবং সকল পেশাজীবীদের। তা হতে পারলে বিজয়কে নিজেদের কব্জায় রাখা সম্ভব হবে। একাজে বামপন্থীরা অবদান রাখবেন সামনের কাতারে থেকে। সে লক্ষে সকল বামরা মিলে একটি বিকল্প শক্তি গড়ে তুলবেন- এটা সময়ের দাবি। মনে রাখতে হবে স্রোতে গা ভাসানোর সময় এটা নয়।
দ.ক.সিআর.২৪