চুনারুঘাট উপজেলার আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের গোছাপাড়া জামে মসজিদ কমিটির সাথে দীর্ঘদিন ধরে সমস্যা চলে আসছে অত্র মসজিদের দাতা সদস্য মরহুম ছমদ মিয়ার পুত্র আব্দুল মন্নান মিয়ার।
আঃ মন্নান মিয়া অভিযোগ তোলেছেন, গোছাপাড়া জামে মসজিদের প্রবেশের রাস্তাটি রেকর্ড মুলে তার পিতা ছমদ মিয়া গংদের বিনিময় সম্পত্তি। কিন্তু ওই রাস্তার প্রবেশ মুখে মসজিদের গেইট নির্মাণের সময় কমিটির লোকজন একটি হেন্ডনোট তৈরি করেন, যেখানে রেকর্ডের মালিকানার বিপরীতে আমার পিতা ছমদ মিয়া গংদের ওয়ারিশানদের এই রাস্তা দিয়ে চলাচলে মসজিদ কর্তৃপক্ষ কোনো প্রকার বাধা নিষেধ করবে না এই মর্মে একটা স্বরলিপিতে মরহুম ছমদ মিয়ার স্বাক্ষর নেয়া হয়। অথচ উক্ত রাস্তাটি রেকর্ড মুলে বিনিময় সুত্রে ছমদ মিয়া গংরাই মালিক, যা মসজিদ কর্তৃপক্ষ বানোয়াট কাগজ তৈরি করে আমার মরহুম নির্লোভ পিতার একক স্বাক্ষরে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে বলে আঃ মন্নান মিয়ার অভিযোগ।
এই বিষয়ে বিশিষ্ট মুরব্বিদের নিয়ে শালিসও বসেছে বেশ ক’বার। সম্প্রতি সাবেক চেয়ারম্যান আঃ লতিফের সভাপতিত্বে, সাবেক মেম্বার দুলাল ভুইয়ার সঞ্চালনায়, আমুরোড বাজারের ব্যবসায়ি মিজান মিয়াসহ বিচারকগণ বাদী বিবাদীর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান কমিটি ভেঙ্গে নতুন কমিটি গঠনের নিমিত্তে পরবর্তি ধার্য্য তারিখে দুলাল ভুইয়ার উপস্থিতিতে নতুন কমিটিতে দাতা সদস্য আব্দুল মন্নান মিয়া আজীবন সভাপতি/সম্পাদকের পদের দাবী তোললে মুসল্লিগণ শর্তের বিনিময়ে জমি নিতে অনিচ্ছা পোষণ করেন। যেকারণে আব্দুল মন্নানের জমি দানের স্বরলিপি অসম্পূর্ণ রয়ে যায় সেদিন।
এদিকে নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকায় সরকারি অনুদান ফেরত নিয়ে গেছে বরাদ্ধ বিভাগ! নির্মাণ কাজবন্ধ করার ব্যাপারে দাতা সদস্য আব্দুল মন্নানের কাছে কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, মসজিদ কমিটি নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে মসজিদের জায়গা জমি বিক্রি করে দিচ্ছে, এখন হাফিজখানার নির্মাণের জন্য আমার দানকৃত জমিতে যে হাফিজখানাই নির্মাণ হবে এই মর্মে একটি লিখিত দিলে নির্মাণ কাজে আমার কোন আপত্তি থাকবে না।
পরবর্তি সাধারণ সভায় উক্ত প্রস্তাব উল্লেখ করা হইলে সকলেই আব্দুল মন্নান মিয়ার প্রস্তাব মেনে নেন। এবং দানপত্র সম্পন্ন করার পরবর্তি দিন তারিখ ধার্য করা হইলে আব্দুল মন্নান মিয়া ধার্য তারিখ আসতেই নতুন অজুহাতে স্বাক্ষর করা থেকে সরে দাড়ান। এই নিয়ে কয়েকবার তার কাছ থেকে বিফল হয়ে ফিরে আসার পর গ্রামবাসি সবাই মিলে আব্দুল মন্নান মিয়ার নামে হবিগঞ্জ জজকোর্ট থেকে একটি লিগ্যাল নোটিস পাঠান। যেখানে উল্লেখ্য করা আছে, ওয়াকফ করা সম্পত্তির দানপত্রে স্বাক্ষর না করলে হাফিজখানার প্রারম্ভিক নির্মাণ ব্যয় বাবদ ৩,৯২,২৪০ টাকা মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটিকে ফেরত দিতে। অন্যতায় আদালত তার বিরোদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করিতে বাধ্য থাকিবে।
মসজিদের জমি বিক্রির ব্যাপারে ১নং ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার জনাব আঃ রউফ সাহেবের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, যদিও হাফিজ খানার নির্মাণ ব্যয় জোগান দিতে গিয়ে মসজিদ কমিটি ও গ্রামবাসি মিলে স্বিদ্ধান্ত হয়- মসজিদের নিম্নমানের জমিগুলো বিক্রি করে ভালো এবং আয়বর্ধক জমি ক্রয় করার এর মসজিদের আয় দিয়ে হাফিজখানা নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার। তদুপরি এখন পর্যন্ত মসজিদের কোন প্রকার জমি বিক্রি করা হয়নি। উপরন্তু মসজিদের বারান্দা নির্মাণের জন্য প্রায় ৪ লক্ষ টাকার জমি ক্রয় করা হয়েছে।
উক্ত বিষয়টি দুলাল মেম্বার সাহেবের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, গোছাপাড়া জামে মসজিদ তথা গ্রামবাসির সাথে আঃ মন্নানের মতানৈক্য নিরসনে সম্প্রতি যে শালিশ বৈঠক বসেছিলো সেখানে- রাস্তা, কবরস্থান, মসজিদ এবং হাফিজখানাসহ আঃ মন্নানের সকল অভিযোগের নিষ্প্রত্তি করা হয়েছিল। এবং কথা ছিলো ২দিন পর জমির দানপত্র স্বাক্ষর সহ আমার কাছে সমজিয়ে দেয়ার জন্য। কিন্তু সে স্বাক্ষাত না করায় তার সাথে যোগাযোগ করতে গেলে সে জানায়- “কমিটির আজীবন সভাপতি বা সেক্রেটারী পদ না দিলে জমি দানে আমার কোন আগ্রহ নেই। একথা শুনার পর আমি উঠে চলে আসি এবং পরে আর কখনো যাইনি।
এমতাবস্থায় গ্রামবাসি মারফত জানা যায়- অচিরেই তারা আঃ মন্নান মিয়ার বিরোদ্ধে সেনাক্যাম্পে অভিযোগ নিয়ে দাড়াবেন।
দ.ক.সিআর-২৪