
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙ্গা-রেজিনগর এলাকায় বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাবরি মসজিদের আদলে নতুন মসজিদ নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। ভিত্তিপ্রস্তর অনুষ্ঠানে অংশ নেয় লাখো মানুষ। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) নতুন মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন রাজ্যটির ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বহিষ্কৃত বিধায়ক হুমায়ুন কবির।
সকাল ১০টায় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া এই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন সৌদি আরব থেকে আগত মুফতি সুফিয়ান এবং মদিনা থেকে আগত ধর্মীয় নেতা শেখ আবদুল্লাহ।
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে হাজার হাজার মুসল্লি ইমারতি খয়রাত হিসেবে মাথায় ইট নিয়ে অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
মসজিদ নির্মাণে ৩০০ কোটি টাকার বাজেট ধরা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হুমায়ুন কবির। এসময় দান হিসেবে কয়েক কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়; একজন ডাক্তার একাই দেন এক কোটি রুপি। এ ছাড়া একজন ব্যবসায়ী একাই ৮০ কোটি টাকা দেবেন বলে জানিয়েছেন হুমায়ুন কবির।
তিনি দাবি করেন, ২৫ বিঘা এলাকা নিয়ে মসজিদ চত্বর গড়ে উঠবে, যেখানে কলেজ, হাসপাতাল, গেস্টহাউস ও সভাকক্ষও থাকবে। তবে প্রকল্পটির বিরুদ্ধে সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা হয়েছিল। কিন্তু আদালত জানিয়েছে, উপাসনালয় নির্মাণ সংবিধানসম্মত অধিকার; তাই তারা হস্তক্ষেপ করবে না। আইন-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে এলাকাজুড়ে মোতায়েন করা হয় ৩ হাজারের বেশি বিএসএফ, কেন্দ্রীয় সশস্ত্র বাহিনী, র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সের সদস্যরা ।
হুমায়ুন কবির সমাবেশে বলেন, একটি ইটও সরানো যাবে না; এটি মুসলমানদের প্রতিশ্রুতি।
১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর ভেঙে ফেলা হয়েছিল অযোধ্যার বাবরি মসজিদ, যাকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে আলোড়ন দেখা দেয়। সে কথা মাথায় রেখেই এই দিনকেই মুর্শিদাবাদে বাবরি মসজিদের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন বা শিলান্যাসের দিন হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন হুমায়ুন কবীর।
দলের ‘ভ্রূকুটি’ উপেক্ষা করেই অবশ্য বাবরি মসজিদের শিলান্যাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের বিধায়ক এবং তার এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েক দিন ধরেই উত্তপ্ত ছিল রাজ্য রাজনীতি।
একদিকে বিজেপি এবং কংগ্রেস যেমন তাকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি, তেমনই তার নিজের দল তৃণমূল কংগ্রেসও সম্প্রতি হুমায়ুনকে বহিষ্কার করে।
তার বিরুদ্ধে তৃণমূলের তরফে ধর্মীয় বিভাজনের অভিযোগ তোলা হয়েছিল। বিজেপির সঙ্গে তার যোগ রয়েছে বলে অভিযোগও তোলে।
মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গায় বাবরি মসজিদের শিলান্যাস কর্মসূচির আগে শুক্রবার থেকেই বাড়ানো হয়েছিল নিরাপত্তাব্যবস্থা, র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স বা র্যাফ মোতায়েন করা হয়েছিল। অন্যদিকে সকাল থেকেই অনুষ্ঠান মঞ্চে মানুষ জড়ো হতে থাকে।
অযোধ্যার বাবরি মসজিদ ভাঙার প্রসঙ্গ টেনে হুমাময়ুন কবির বলেছেন, ৩৩ বছর আগে মুসলমানদের হৃদয়ে আঘাত হানা হয়েছিল। সেই আঘাতে আজ সামান্য হলেও প্রলেপ পড়েছে।
দ.ক.সিআর.২৫