আসাদ ঠাকুর, অমনিবাস: হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার আহম্মদাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার, আমু চা বাগানের বাসিন্দা, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের লস্করপুর ভ্যালীর সাবেক সেক্রেটারি যুবরাজ ঝরা বুধবার (৮ অক্টোবর) হৃদক্রীয়া বন্ধ হয়ে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। তিনি স্ত্রী ও ২ পুত্রসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
যুবরাজ ঝরা চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি এবং জীবনযাত্রার মান নিয়ে তিনি সবসম সোচ্চার ছিলেন, যা তাকে শ্রমিকদের কাছে পরিচিতি এনে দিয়েছিল। তিনি শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি বৃদ্ধির জন্য আন্দোলন করেছেন। ২০২২ সালের বৃহৎ আন্দোলনের পর মজুরি বাড়িয়ে ১৭০ টাকা করা হয় এবং ২০২৫ সালের মে মাস নাগাদ মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা হয়েছে। সেক্ষেত্রে যুবরাজ ঝরা সেখানে একজন সক্রিয় নেতা হিসেবে পরিচিত।
চা শ্রমিকদের জন্য টিসিবির (ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ) মাধ্যমে পণ্য বিতরণ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনায়
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভ্যালি নেতা হিসাবে তার উপস্থিতি ছিল গুরুত্বপূর্ণ।
এছাড়াও চা বাগানগুলিতে চা শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মান, শিক্ষা, এবং স্বাস্থ্যসেবার অভাব নিয়ে যুবরাজ ঝরা আন্দোলন করেছেন অনেকবার। ‘মুল্লুক চলো আন্দোলন’র প্রেক্ষাপটে চা শ্রমিকদের ইতিহাস এবং তাদের অধিকারের জন্য লড়াইয়ের প্রতীকী হিসেবে যুবরাজ ঝরার কাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিলো।
বাবু যুবরাজ ঝরা চা শ্রমিকের সন্তান হলেও নিজ জনগোষ্ঠির বাইরে এসেও তাঁর নেতৃত্বের প্রভাব উল্লেখযোগ্যভাবে ছিলো পরিলক্ষিত।
তিনি আওয়ামী দুঃশাসনের হিংস্র সময়কালে আহম্মদাবাদ বিএনপির আমু চা বাগান যুবদলের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি অত্র ইউনিয়ন পরিষদের একজন সফল মেম্বার ছিলেন। পরবর্তিতে পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়ে অসংখ্য হিন্দু মুসলমানের সমর্থন পেয়ে দেখিয়ে ছিলেন ভোটের চমক।
কথিত আছে যে, তখনকার সময়ের আহম্মদাবাদের তিনবারের চেয়ারম্যান সিংহ পুরুষ আঃ লতিফ ও প্রভাবশালী রাজনেতাদের স্নেহভাজন সঞ্জু চৌধুরীর সাথে নির্বাচনী প্রতিধন্ধিতায় যুবরাজ ভোটের দৌড়ে এগিয়ে থাকার পরও রাজনৈতিক কোটকৌশলে পরাস্থ হন। তারপর থেকে আম্দোলন সংগ্রাম আর নেতৃত্বের ত্যাজস্বক্রীয়তায় তার অনীহা এসে যায়। সেই থেকে নিবু নিবু আলোর প্রদীপটি গতকাল রাত ৮টায় আমাদের কাছ থেকে চিরদিনের জন্য নিবে যায়!
দ.ক.সিআর.২৫