আসাদ ঠাকুর, অমনিবাস: বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। প্রতিটি ঋতুরই রয়েছে স্বতন্ত্র রূপ, রস ও সৌন্দর্য। ঋতু পরিবর্তনের পালাবদলে প্রকৃতিতে এখন চলছে শরৎকাল। শরৎ ও কাশফুল একই সুতোয় গাঁথা। শরৎকালেই কাশফুলের সঙ্গে সাদা মেঘের মিতালি দেখা যায়। কাশফুল দেখতে ছুটে আসেন সৌন্দর্যপিপাসুরা।
প্রতিবছর আগস্টের শেষের দিকে অথবা অক্টোবরের প্রথম দিকে এই শুভ্র ফুল ফোটে। নদী ও পুকুর পাড়ে কিংবা বিস্তীর্ণ বালুচরে বড্ড অবহেলায় ফোটে কাশফুল। লাগে না কোনো যত্ন-আত্তি।
শরতের বিকেলে নীল আকাশের নিচে দোল খায় শুভ্র কাশফুল। কখনো কালো মেঘ আবার কখনো সাদা মেঘের আবরণে লুকিয়ে হাসে সোনালি সূর্য। বাংলার প্রকৃতিতে শরতের এই দৃশ্য দেখলে যে কেউই মুগ্ধ হয়ে যায়। কাশফুলের বাতাসে দোল খাওয়ার দৃশ্য যেন মন কেড়ে নেয় সবার। কাশফুলের এই নয়নভিরাম সৌন্দর্য দেখতে এবং যান্ত্রিক জীবনের কোলাহল থেকে দূরে প্রকৃতির মুক্ত আনন্দ পেতে অসংখ্য মানুষ এই স্থানগুলোতে ছুটে আসে।
দিগন্ত জোড়া কাশফুলের মনোরম দৃশ্য মানব মনকে করে তোলে আন্দোলিত ও প্রফুল্ল। কাশবন শুধু প্রকৃতির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে না, এর রয়েছে নানা ঔষধি গুণও। নদীর ধার, জলাভূমি, চরাঞ্চল, শুকনো এলাকা, পাহাড় কিংবা গ্রামের উঁচু স্থানে কাশের ঝাড় বেড়ে ওঠে। তবে নদীর তীরেই কাশফুল বেশি দেখা যায়। নদীর পানি কমে গিয়ে জেগে ওঠে সবুজ চর। প্রতিটি চরেই ফুটতে থাকে কাশফুল।
সবুজ প্রকৃতি আর নীল আকাশের মাঝে সাদা কাশফুল নৈসর্গিক সৌন্দর্যের আঁধার। কাশফুলের অপরূপ সৌন্দর্য বিমোহিত করে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কাশফুলের ঢেউ খেলা স্রোত, ফুলের প্রস্ফুটিত রূপ-লাবণ্য প্রকৃতিকে অপরূপ সাজে সাজিয়ে তোলে।
প্রতিবছর ঋতুর রানি শরৎ আসে অপার সৌন্দর্য নিয়ে। তাই তো শরৎ এলেই কাশফুলের দেখা পেতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসে অসংখ্য মানুষ। চোখ ভরে কেবল সৌন্দর্যই উপভোগই করে না, ফ্রেমে বন্দি করে নিয়ে যায় অজস্র স্মৃতি।
গ্রামের অনেক নারী এখনো কাশফুল দিয়ে ঝাড়ু ও মাদুর তৈরি করেন, যা এই ফুলটির একটি ঐতিহ্যবাহী ব্যবহার।
দ.ক.সিআর.২৫