➖
কালনেত্র ডেস্ক: ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর ভূমিকা ছিল অত্যন্ত বিতর্কিত। দলটি বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করে এবং পাকিস্তানের অখণ্ডতা বজায় রাখার পক্ষে অবস্থান নেয়।
জামায়াতে ইসলামী এবং তাদের তৎকালীন ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘ (বর্তমানে ইসলামী ছাত্রশিবির) পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য বিভিন্ন আধা-সামরিক বাহিনী গঠন করে, যেমন:
* রাজাকার:
এটি ছিল একটি আধা সামরিক বাহিনী যা পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে সহায়তা করত এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলন দমনে সক্রিয় ছিল।
* আল-বদর:
এটি ছিল একটি বুদ্ধিজীবী নিধনকারী বাহিনী, যারা মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে অনেক বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, চিকিৎসক এবং সাংবাদিককে হত্যা করেছিল।
* আল-শামস:
এটিও ছিল আরেকটি সহযোগী বাহিনী যা পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে মিলে বিভিন্ন atrocities (নির্যাতন) এবং গণহত্যায় জড়িত ছিল।
* শান্তি কমিটি:
জামায়াতে ইসলামীর নেতারা বিভিন্ন “শান্তি কমিটি” গঠনে নেতৃত্ব দেন, যা মূলত পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে সহযোগিতা করত এবং স্বাধীনতাকামী বাঙালিদের বিরুদ্ধে কাজ করত।
জামায়াত নেতারা যুক্তি দিয়েছিলেন যে, তারা ভারতের আধিপত্যের আশঙ্কা এবং ইসলামী আন্দোলনের স্বার্থকে সামনে রেখে পাকিস্তানের অখণ্ডতা বজায় রাখতে চেয়েছিলেন। তাদের মতে, ভাষাগত জাতীয়তাবাদ মুসলিম ঐক্যে ফাটল ধরাতে পারে।
স্বাধীনতার পর, বাংলাদেশ সরকার জামায়াতে ইসলামীকে রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে এবং দলের অনেক নেতা পাকিস্তানে নির্বাসিত হন।
পরবর্তীতে ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর এবং সামরিক শাসন আসার পর, জামায়াতের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয় এবং তারা আবার রাজনীতিতে সক্রিয় হয়।
বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (International Crimes Tribunal) ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধের জন্য জামায়াতের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে convicted (দোষী সাব্যস্ত) করে এবং তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের অভিযোগ ছিল।
দ.ক.সিআর.২৫