➖
ঝলক দত্ত, শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি
বাংলাদেশ অনূর্ধ-১৯ জাতীয় ফুটবল দলের সম্ভাবনাময় সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার স্যামুয়েল রাকসাম দেশের গৌরব ছড়িয়ে নিজ শহর শ্রীমঙ্গলে ফিরে এসেছেন। তাকে বরণ করতে সকাল থেকেই অপেক্ষায় ছিলেন তার বাবা-মা, কোচ সালেহ আহমদ, স্থানীয় ক্রীড়াবিদ, শিশু-কিশোর এবং সাধারণ মানুষ। ফুলের মালা ও উচ্ছ্বাসে ভরা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মিলেছিল গর্ব ও আবেগের অপূর্ব সম্মিলন।
শ্রীমঙ্গলের কালাপুর ইউনিয়নের ফুলছড়া গারো পল্লীতে জন্ম সম্ভাবনাময় ফুটবলার স্যামুয়েল রাকসাম। তার পিতা নীলটন থিগিদী ও মাতা নেফলা রাকসাম, দীর্ঘদিন ধরে চা-বাগানের শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন এবং পরিশ্রম করে চালিয়েছেন সংসার। ৭ ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট স্যামুয়েল। প্রতিকূল বাস্তবতা কখনো তার স্বপ্নের পথকে বাধাগ্রস্ত করতে পারেনি। গ্রামের কাঁচা মাঠে খালি পায়ে ছুটে বেড়ানো সেই কিশোর আজ জাতীয় ফুটবলের এক উজ্জ্বল মুখ। কঠোর পরিশ্রম ও অনুশীলনের মাধ্যমে তিনি নিজেকে প্রস্তুত করেছেন দেশের ফুটবলের মঞ্চে প্রতিষ্ঠা করার জন্য।
কোচ সালেহ আহমদ এর অসামান্য অবদান
স্যামুয়েলের ফুটবল প্রতিভা বিকাশে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছেন শ্রীমঙ্গলের ভৈরবগঞ্জ ফুটবল একাডেমির অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক সালেহ আহমদ। কঠোর অনুশীলন, শৃঙ্খলা ও কৌশলগত দিকনির্দেশনার মাধ্যমে তিনি স্যামুয়েলকে দেশের ফুটবলের বড় মঞ্চের জন্য প্রস্তুত করেছেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কোচ সালেহ আহমদ আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, “স্যামুয়েল আমাদের গর্ব। তার এই অর্জন শুধু ব্যক্তিগত সাফল্য নয়, এটি পুরো শ্রীমঙ্গলের তথা মৌলভীবাজার জেলার সম্মান। বাংলাদেশ অনূর্ধ-১৯ দলের হয়ে অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়ে ইতোমধ্যে ফুটবল বিশ্লেষকদের নজর কেড়েছেন স্যামুয়েল রাকসাম। তার বল কন্ট্রোল, নিখুঁত পাসিং ও ম্যাচ রিডিং দক্ষতা তাকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
উল্লেখ্য, সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ ফুটবল টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ দল ফাইনালে টাইব্রেকারে ভারতের কাছে হেরে রানার্সআপ হয়। তবে স্যামুয়েলের পারফরম্যান্স দলের শক্তি ও ভবিষ্যতের সম্ভাবনাকে উজ্জ্বল করে তুলেছে।
বাবা-মার চোখে আনন্দাশ্রু, কোচের সন্তুষ্টির হাসি, আর সাধারণ মানুষের উচ্ছ্বাস—সবকিছুই প্রমাণ করে যে গারো পল্লী থেকে উঠে আসা এই প্রতিভাবান ফুটবলার একদিন দেশের ফুটবলের ভবিষ্যতকে আলোকিত করবেন।
দ.ক.সিআর.২৫