1. live@kaalnetro.com : Bertemu : কালনেত্র
  2. info@www.kaalnetro.com : দৈনিক কালনেত্র :
বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ০৫:০৬ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
আমার দেশ এর সম্পাদকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে শ্রীমঙ্গলে মানববন্ধন হবিগঞ্জের হাওরে ধানের বাম্পার ফলন দাম নিয়ে শংকিত কৃষক! সারা দেশে এলজিইডির কাজে দুদকের অভিযান- কালনেত্র ক্লিনটেক: পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির পথচলা ও ভবিষ্যৎ চুনারুঘাটে খাল খননে জনতার বাঁধা, পরিদর্শনে ইউএনও, তোপের মুখে ইউপি চেয়ারম্যান মাধবপুরে মরিচের বস্তায় মিলল গাঁজা, ২ কারবারি গ্রেপ্তার  মাধবপুরের পাহাড়ে বাচ্চাসহ ঘুরছে ভাল্লুক, বনে প্রবেশে সতর্কতা জোরদার  জীবনে ‘সুখী’ হবেন কীভাবে— গণপিটুনির নামে মানবতা বিরোধী নিষ্ঠুর মব জাস্টিজ বন্ধ হোক অগ্নিকান্ডে বসতবাড়ি সহ ৬ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভস্মীভূত—

ঈদের ছুটিতে ভিড় জমেছে চায়ের রাজ্যে

দৈনিক কালনেত্র
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৩ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৩১ বার পড়া হয়েছে
সালাহউদ্দিন শুভ, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
দৈনিক কালনেত্র 

পবিত্র ঈদ উল ফিতরের টানা ছুটিতে পর্যটক ও স্থানীয়দের ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে চায়ের রাজ্য মৌলভীবাজার। চায়ের রাজধানীখ্যাত এই পর্যটন নগরীর চা বাগানগুলোতে ঈদের ছুটি কাটাতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন পর্যটকরা। চা বাগানসহ দর্শনীয় স্থানগুলোতে ভীড় করছেন তারা। হোটেল রিসোর্ট মালিকরা জানিয়েছেন বেশীরভাগ হোটেল রিসোর্টই আজ ঈদের ৪য় দিন হাউজফুল হয়ে আছে। এদিকে বন্যপ্রানী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের তথ্যমতে গত তিনদিনে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে ৪ হাজার ৫শত ৩৩জন পর্যটক প্রবেশ করেন। পর্যটকদের প্রবেশ ফি থেকে ৫লক্ষ ১২হাজার পঁচান্নব্বই টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়।

জীব বৈচিত্র্যে ভরপুর বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, পদ্মকন্যা নয়নাভিরাম মাধবপুর লেক, ঝর্ণাধারা হামহাম জলপ্রপাত, ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী ধলই চা বাগানে অবস্থিত মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-ঐতিহ্যের বাহক বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমান স্মৃতিসৌধ, বন্যপ্রাণির অভয়ারণ্য রাজকান্দি বন, শমসেরনগর বিমানবন্দর, প্রাচীন ঐতিহ্যের বাহক লক্ষ্মীনারায়ণ দিঘী, ২০০ বছরের প্রাচীন ছয়চিরী দিঘী, শমসেরনগর বাঘীছড়া লেক, আলিনগর পদ্মলেক, মাগুরছড়া পরিত্যক্ত গ্যাসফিল্ড, ডবলছড়া খাসিয়া পুঞ্জি, মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জি, অপরূপ শোভামণ্ডিত উঁচু নিচু পাহাড়বেস্টিত সারিবদ্ধ পদ্মছড়া চা বাগান, শিল্পকলা সমৃদ্ধ মনিপুরী, প্রকৃতির পূজারী খাসিয়া, গারো, সাঁওতাল, মুসলিম মনিপুরী, টিপরা ও গারোসহ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিসত্তার জীবন ধারা ও সংস্কৃতিসহ প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এই জনপদ পর্যটকদের মন ও দৃষ্টি কেড়ে নেয়।

অন্যদিকে শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন চা বাগান ও পর্যটন এলাকা ও হোটেল রিসোর্ট ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন বয়সের লোকজন পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। হোটেল রিসোর্টগুলোতে সময় কাটাচ্ছেন অনেকে। পর্যটন এলাকার চায়ের দোকান, রেস্টুরেন্টে ভীড় দেখা গেছে। শ্রীমঙ্গলের বধ্যভূমি একাত্তুর, চা কন্যার ভাস্কর্য, ভাড়াউড়া চা বাগান, বিটিআরআই রাধানগর, সাত রং এর চায়ের দোকান, মনিপুরী পাড়ায় পর্যটকরা ভীড় করেছেন। শ্রীমঙ্গল শহরের প্রায় প্রতিটি সড়কে বিভিন্ন ধরনের গাড়ি দেখা যাচ্ছে পর্যটকদের। তাছাড়া চাদের গাড়িখ্যাত জীপগাড়িগুলো নিয়ে পর্যটকদের উল্লাস করতেও দেখা গেছে।

এদিকে কমলগঞ্জের মাধবপুর লেক ও লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে দেখা মিলে দূর-দূরান্ত থেকে আগত পর্যটনপ্রেমী ভ্রমণ পিয়াসুদের। এদের মধ্যে সপরিবারে ও কাপলদের ঘুরতে আসা পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। ঈদের দিন সোমবার লোকজনের উপস্থিতি ছিল অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি। ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পর্যটকরা ছুটে এসেছেন জীব বৈচিত্র্যের অপরূপ সমাহার ঘুড়ে দেখতে।

ঈদের ছুটিতে লাউয়াছড়ায় জাতীয় উদ্যানে ঘুরতে আসেন চট্টগ্রাম থেকে হাবিব ও পায়েল। তারা মূলত কাপল। এখানে এসে তারা জানান, লাউয়াছড়ার বন একটি সমৃদ্ধ বন। প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্য আর জীব বৈচিত্র্যে ভরপুর এই বনটি যে কেউ দেখলে মন জুড়িয়ে যাবে। তারা জানান, আমরা অকে বছর ধরে ট্রাই করছি আশার জন্য কিন্তু সময় হয়ে উঠেনা। শনিবার রাতে ঢাকা থেকে কমলগঞ্জের একটা রিসোর্টে উঠেছি। দুপুরে আমরা বের হয়ে লাউয়াছড়া, মাধবপুর লেক ও কিছু চা বাগান এলাকা ঘুড়ে দেখলাম। খুব ভালো লেগেছে। আরও ৫ দিন এখানে থাকবো। মৌলভীবাজার জেলার সবগুলো পর্যটন স্পর্টগুলো ঘুড়ে দেখার খেয়াল আছে।’

 

এদিকে সিলেট থেকে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধে ঘুড়তে আসেন নাসরিন, মনি, সায়লা, আমিনা, ময়না ও আলম, বাছিত, সায়েক ও সাইদুল তারা এ প্রতিবেদককে বলেন,‘পরিবারের সবাইকে নিয়ে এখানে এসেছি। খুবই ভালো লাগছে। শুধু এই দুই জায়গা না চা বাগানসহ মনিপুরি পাড়া দেখেছি খুব ভালো লেগেছে। মন চাচ্ছে না চল যেতে। তারপরও যেতে হচ্ছে। আবার যেকোন দিন ছুটি পেলে চলে আসবো।’

শ্রীমঙ্গলে ঘুড়তে আসা সামিয়া নামের একজন পর্যটক বলেন, ‌‘চা বাগানে এসে ছবি তুললাম। এই প্রথম চা বাগানে আসা। যেদিকে যাচ্ছি ভালো লাগছে। এখানে এসে ভালো সময় কাটলো।পারভেজ ও জাহেদ নামের আরও দুজন বলেন, রাতে রওয়ানা দিয়েছিলাম প্রাইভেট গাড়ি নিয়ে। সকালে এসে রিসোর্টে উঠেছি। এখন বের হয়েছি। গরম একটু বেশী তবে ভালো লাগছে। রাস্তার পাশে দাড়িয়ে আনারস খাচ্ছি, চা বাগানে ঘুরে বেড়াচ্ছি। অনেক কিছু দেখার আছে শ্রীমঙ্গলে।’

শ্রীমঙ্গল উপজেলার চামুং রেস্টুরেন্টের পরিচালক পংকজ ভট্টাচার্য বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে স্থানীয়দের ভিড় ছিলো ৩দিন। পর্যটকরাও ছিলো। আমরা ভালো পর্যটক ও স্থানীয়দের ভালো সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি এই ঈদের ছুটিতে ভালো বেচাকেনা হবে। ঈদের ৪য় দিনেও প্রচুর পর্যটক এসেছে বলেও জানান তিনি।

শ্রীমঙ্গল ট্যুর অপারেটর এন্ড ট্যুর গাইড এসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক রাসেল আলম বলেন, ‘ঈদের ৪র্থ দিন শহরের কিছু হোটেল ছাড়া ছোট বড় সব রিসোর্টেই হাউজফুল। প্রচুর পর্যটক শ্রীমঙ্গলে ঈদ উপলক্ষে আমরা ট্যুর গাইডরা প্রচুর বুকিং পেয়েছি। এরমধ্যে বিদেশী পর্যটকরাও রয়েছেন। দেশের অন্যান্য অনেক জায়গায় পর্যটকরা ছিনতাই বা বিভিন্ন কারনে হয়রানির শিকার হলেও শ্রীমঙ্গল আসা পর্যটকরা শ্রীমঙ্গল এসে রুমে উঠে পুরো জেলা ঘুরে দেখেন, কিন্তু ছিনতাই বা হয়রানী হয় না বলেই চলে। এজন্য পর্যটকদের কাছে শ্রীমঙ্গল নিরাপদ জায়গা। আমরা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাই যাতে পর্যটকদের জন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়।’

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের লাউয়াছড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম জানান, ‘এ ঈদের অন্যান্য সময়ের তুলনায় পর্যটকের সমাগম অধিক ঘটেছে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে। তবে ঈদে পর্যটকদের উপস্থিতি সব সবময়েই বেশি হয়ে থাকে। ঈদের দিন থেকে ১০দিন পর্যটকের আগমন বেশি লক্ষ করা যায়।’

তিনি বলেন, ঈদের টানা ছুটিতে প্রচুর পর্যটক লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে পরিবার – পরিজন নিয়ে ঘুরতে এসেছেন, আগত পর্যটকদের যাতে কোন অসুবিধা না হয় সেজন্য বনকর্মীদের পাশাপাশি  সিপিজি’র সদস্য ট্যুরিস্ট গাউডরা রয়েছেন, এছাড়া পর্যটকদের নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক টুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা রয়েছেন। তিনি জানান, গত তিনদিনে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে ৪ হাজার ৫শত ৩৩জন পর্যটক প্রবেশ করেন। পর্যটকদের প্রবেশ ফি থেকে ৫লক্ষ ১২হাজার পঁচান্নব্বই টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়।

ট্যুরিস্ট পুলিশ শ্রীমঙ্গল জোন এর পরিদর্শক মো. কামরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, এবার ঈদের ছুটি বেশ লম্বা থাকায় প্রচুর পর্যটক সমাগম হয়েছে। ইতিমধ্যেই আমরা পর্যটন সংশ্লিষ্টদের সাথে সভা করেছি। আমরা পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য প্রতিটি দর্শনীয় স্থানে নজরদারি রাখছি। ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ থানার পুলিশ, র‍্যাব সাদা পোশাকেও আমাদের টুরিস্ট পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে। পর্যটকরা যেন নির্ভিগ্নে ঘোরাফের করে সুন্দরভাবেই বাড়ি ফিরতে পারে আমরা সেভাবেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা রেখেছি।

দ.ক.সিআর.২৫

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© 𝐰𝐰𝐰.𝐤𝐚𝐚𝐥𝐧𝐞𝐭𝐫𝐨.𝐜𝐨𝐦
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট