1. live@kaalnetro.com : Bertemu : কালনেত্র
  2. info@www.kaalnetro.com : দৈনিক কালনেত্র :
বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:১২ অপরাহ্ন

আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালান রুটের মধ্যে বাল্লা সীমান্ত উল্লেখযোগ্য 

দৈনিক কালনেত্র
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৫

 

মহিবুর তালুকদার শিবলু: ভৌগলিক কারণে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালান রুট এর মাঝামাঝি অবস্থানে হওয়ায় প্রতিবেশী দেশ ভারত ও মিয়ানমার থেকে অরক্ষিত সীমান্ত পথে সবচেয়ে বেশি মাদকের অনুপ্রবেশ ঘটে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর মাদকের প্রবেশপথ হিসেবে বাংলাদেশের সীমান্ত সংলগ্ন ৩২টি জেলাকে ঝুঁকিপূর্ণ জেলা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বাংলাদেশের পূর্ব সীমান্ত দিয়ে ভারতের আসাম, ত্রিপুরা এবং মিজুরামের চারটি পয়েন্ট দিয়ে সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা এবং ফেনীতে মাদক ঢুকছে। আর সিলেটের এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য চুনারুঘাটের বাল্লা সীমান্ত। সবচেয়ে বেশি মাদকের অনুপ্রবেশ ঘটে।

বিজিবির প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা যায়, মিয়ানমারে ইয়াবা তৈরির কারখানা আছে ২৯টিরও বেশি। এসব কারখানায় উৎপাদিত ইয়াবার সিংহভাগ পাচার হয় বাংলাদেশে।

বিজ্ঞজনদের দাবি, আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দায়িত্বে শিথিলতায় অসাধু মাদক কারবারীদের বেপরোয়া কর্মকান্ডে মাদক দেশে ভয়াবহ রূপ পরিগ্রহ করেছে। স্কুল–কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে দেশের প্রতিটি নগর–শহরের অলিগলিতে হাত বাড়ালেই মিলছে মাদক। শহরের বাইরে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও মাদক এখন সহজলভ্য। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি বাড়ানো হলেও বিভিন্ন কৌশলে মাদক কারবারিরা দেশে মাদকের চালান স্থানান্তর করছে। অ্যাম্বুল্যান্স, সবজিসহ নিত্যপণ্যের গাড়িতে ইয়াবা, ফেনসিডিলসহ নানা মাদক তারা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যাচ্ছে।

দেশের অর্থনীতিতেও মাদকের বিপুল প্রভাব পরিলক্ষিত। অবৈধ মাদক আমদানির জন্য দেশ থেকে প্রতিবছর হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। ২০২৩ সালের জুনে জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা ইউনাইটেড নেশনস কনফারেন্স অন ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আংকটাড) এর প্রতিবেদনে উপস্থাপিত হয় যে, শুধু মাদকের কারণে প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৪৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৫ হাজার ৮৪১ কোটি টাকারও বেশি অর্থ পাচার হয়ে যায়। অবৈধ মাদক কারবারের মাধ্যমে অর্থপাচারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বে পঞ্চম এবং এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে।

মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসনের কারণে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষই নানাভাবে মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। আমাদের দেশে মাদক চোরাচালানের ভয়াবহ বিষয় হলো নারী, শিশু এবং কিশোরদেরকে এ গর্হিত কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে তাদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা যেমন বাড়ছে, তেমনি তাদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। ফলে অবৈধ পাচারজনিত সমস্যা আরও ঘনীভূত হয়েছে।

বিভিন্ন সময়ে পরিচালিত মাদকবিরোধী অভিযানে ভয়াবহ এসব মাদকের চালান–বাহকেরা গ্রেপ্তার হলেও মূল হোতা ও মাদক কারবারির পৃষ্ঠপোষকরা হাতের নাগালের বাইরেই থেকে যাচ্ছে। ফলশ্রুতিতে থামানো যাচ্ছে না মাদকের বিস্তার।

দেশের সচেতন–বিজ্ঞজনের দাবি, মাদক পাচার–সেবন বন্ধ করতে মাদকের চাহিদা কমানোর পাশাপাশি জোগানও হ্রাস করতে হবে। নিতে হবে মাদকের বিস্তার রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।

এছাড়াও সীমান্ত এলাকা সুরক্ষিত করা গেলে মাদকের বেপরোয়া আগ্রাসন অনেকটা রুদ্ধ করা সম্ভব। মোদ্দাকথা সবকিছু পরিপূর্ণ রসাতলে যাওয়ার পূর্বেই যথাযথ প্রায়োগিক ব্যবস্থা গ্রহণে রাষ্ট্র–সমাজ–পরিবারের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস অনিবার্য।

দ.ক.সিআর.২৫

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© 𝐰𝐰𝐰.𝐤𝐚𝐚𝐥𝐧𝐞𝐭𝐫𝐨.𝐜𝐨𝐦
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট