সোমবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিভিন্ন সেবাকেন্দ্রে ঘুরলে নজরে পড়ে সেবার বেহাল অবস্থা।সেবাগ্রহীতাদের সাথে আলাপ করলে প্রত্যাশিত চিকিৎসাসেবা না পাওয়ায় ক্ষোভের ফুলঝুরি প্রকাশ করেন রোগীর স্বজনসহ সেবাগ্রহীতা।
ভুক্তভোগী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তি জানান, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা আছেন বেশ আরাম আয়েশে। আমরা সেবা চাইতে গেলেই যত ঝামেলা। প্রেসক্রিপশনেই ইতি টানেন সেবা।ভাগ্যের চাকা আমাদের ঘুরার কথা,কিন্তু ঘুরে ঔষধ কোম্পানিগুলোর।হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি ঔষধ দেওনের সুইডাও নাই তাদের কাছে।এদিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাইরে চিকিৎসা নিতে গেলে অর্থের অভাবে সম্ভব হয়ে উঠেনা সেবাগ্রহীতার।
তথ্য নিয়ে জানা যায়, এই ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা সামগ্রীই নাই না শুধু,নেই জনবলও।মাত্র চারজন চিকিৎসক দ্বারা টেনেটুনে চলছে পাঁচ শতাধিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চিকিৎসা শুধু নামেই, আসলে বিশেষ কোনো সেবা তারা পাচ্ছেন না । রোগীদের চাপ থাকলেও নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসক। প্রতিমুহূর্তে নানা ধরনের হয়রানির শিকার হতে হয় চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের।
উপজেলার পাঁচ লক্ষাধিক মানুষের জন্য চারজন চিকিৎসক যেমন যতেষ্ট না।তেমনি যারা আছেন দায়িত্বে তাদেরও কিছুই করার থাকেনা।তাই রোগীদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় কর্তাগণের প্রাইভেট চিকিৎসা কেন্দ্রে।
উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভাসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন উপজেলার মানুষ চিকিৎসা নিতে আসে এ হাসপাতালে। প্রতিদিন এ হাসপাতালে ৫ শতাধিক মানুষ চিকিৎসা নিতে এসে বঞ্চিত হোন প্রায় একতৃতীয়াংশ।চিকিৎসক ও চিকিৎসা সরঞ্জামের সংকট থাকায় সেবা পাওয়া যাচ্ছে না ঠিকমতো বলে দাবি কর্তৃপক্ষের।পর্যাপ্ত জনবল ও ঔষধ,সরঞ্জাম দিলে হয়তো সেবা নিশ্চিত করা যতো বলে জানান।তাই রোগীদের বাধ্য হয়েই স্থানান্তর করা হয় জেলা সদর হাসপাতাল বা সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।তারা আরও জানান স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে দীর্ঘ সাত মাস ধরে প্রয়োজনীয় ঔষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রীর সরবরাহ নেই। এতে চিকিৎসক ও নার্সরা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। হাসপাতালের বাইরে চিকিৎসা নিতে গিয়ে চাপে পড়ছেন স্বল্প আয়ের মানুষ। সরকারিভাবে ক্যানুলা ও সিরিঞ্জ সরবরাহ কম হওয়ায় রোগীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
একাধিক রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়ার পর প্রয়োজনীয় ঔষুধের অধিকাংশই বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। এতে তাদের আর্থিক চাপ বাড়ছে। অনেকে সেবা না নিয়েই বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য সেবিকা সুবর্ণা ও তানিয়া জানান, চিকিৎসা দিতে গেলে ক্যানুলা, সিরিঞ্জ ও স্যালাইনের মতো অতিপ্রয়োজনীয় চিকিৎসাসামগ্রী যথেষ্ট পরিমাণে থাকতেই হবে। হাসাপাতালে পরিপূর্ণ না থাকায় বাধ্য হয়ে রোগীদের সেগুলো কিনতে হচ্ছে।
দেখা যায়, প্রতিদিন সেখানে গড়ে ৬০ থেকে ৭০ জন রোগী ভর্তি থাকেন। এ ছাড়া বহির্বিভাগে বহু রোগী ভিড় জমান। এসব রোগীর পক্ষে ঔষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রী বাইরের ফার্মেসি থেকে কেনা কঠিন।মরার উপর খাড়ার ঘা দাবি ভুক্তভোগীদের।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক জানান, হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসামগ্রীর মজুত কম। তবুও চেষ্টা চলমান।