বোঝাপড়া
আসাদ ঠাকুর◾
জানা থাকে কী ঘটবে, কী ঘটতে পারে, কী ঘটতে যাচ্ছে। জানা থাকে কী কী দেখতে হবে, কী কী শুনতে হবে, কী কী জানতে হবে, কী কী টানতে হবে এমনকি কী কী মানতেও হবে।
জানা-ই থাকে কোন দৃশ্য কেমন দৃষ্ট হবে, কোন স্বর কেমন রণিত হবে, কোন কথা কেমন বলতে হবে, কোন ধ্বনি কেমন শুনতে হবে।
জানা থাকে শংকায়-আশংকায়, বোধে, অনুভবে, ইতিহাসে আর নিমগ্নতায়।
জানা তো থাকেই অনেকখানি ভবিতব্য অতীতের পায়ের ছাপে।
জানা থাকে প্রসাধনীর তফাৎ কত রক্ততাপে।
জানা থাকে জীবন, জানা থাকে যাপনও।
জানা থাকে কে পর আর কে আপনও।
জানা-ই থাকে কোনটা অবাঞ্ছিত আর কোনটা অনতিক্রম্য।
এ-ও জানা থাকে কোনটা দুর্বোধ্য আর কোনটা বোধগম্য।
জানা থাকে তা হবেই যা হওয়ার ছিল, থাকে এবং থাকবে।
জানা-ই থাকে কে তোমাকে লজ্জা-গর্বে কতখানি রাখবে।
জানা থাকে নিগ্রহ আর অহংকারের ফারাক
কেউই চায় না, নকল মুখে আসল মুখোশ হারাক।
এ-ও জানা, গল্পশেষের উপসংহারে কী লেখা,
যায় না পাওয়া শব্দভিড়ে পাদটিকার দেখা।
জানা থাকেই, কোন স্পন্দনে রক্ত কেমন দুলবে
জানা-ই থাকে, মিথ্যা ঢেকে সত্যই দরোজা খুলবে।
জানা থাকে, সব জানা থাকে, আগে থেকেই।
অনুমানে বা নিশ্চয়তায়।
অনুবাদে বা গণনায়।
কেমন লাগবে, কীভাবে মুখোমুখি হতে হবে, কীভাবে গিলতে হবে, সবই তো জানা থাকে, হয়তো প্রস্তুতিও নেওয়া থাকে।
তবু…
তবু, বুকের মধ্যিখানের রক্তনালিগুলো ছিঁড়ে, পুড়ে, কুঁকড়ে, ছিন্নভিন্ন হয়ে জমাটবাঁধা হিমবাহের মতো আড়ষ্ট হয়ে আসে কেন???
কেন চোরাবালিতে আটকে পড়ে বুকের বাতাস?
কেন ঘোর অমানিশায় মেরুদণ্ড চিঁড়ে বেরিয়ে আসে অবরুদ্ধ নেকড়ে?
কেন রক্তের তোড়ে শীতল আগুন খুবলে পোড়ায় নির্বোধ ভ্রমের শরীর?
আসাদ ঠাকুর, কবি লেখক ও সাংবাদিক
কেসিআর/২৪