1. live@kaalnetro.com : Bertemu : কালনেত্র
  2. info@www.kaalnetro.com : দৈনিক কালনেত্র :
বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১১:৫৪ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
মহান মে দিবস: শ্রমজীবী মানুষের অধিকার-দাবি আদায়ের দিন আমার দেশ এর সম্পাদকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে শ্রীমঙ্গলে মানববন্ধন হবিগঞ্জের হাওরে ধানের বাম্পার ফলন দাম নিয়ে শংকিত কৃষক! সারা দেশে এলজিইডির কাজে দুদকের অভিযান- কালনেত্র ক্লিনটেক: পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির পথচলা ও ভবিষ্যৎ চুনারুঘাটে খাল খননে জনতার বাঁধা, পরিদর্শনে ইউএনও, তোপের মুখে ইউপি চেয়ারম্যান মাধবপুরে মরিচের বস্তায় মিলল গাঁজা, ২ কারবারি গ্রেপ্তার  মাধবপুরের পাহাড়ে বাচ্চাসহ ঘুরছে ভাল্লুক, বনে প্রবেশে সতর্কতা জোরদার  জীবনে ‘সুখী’ হবেন কীভাবে— গণপিটুনির নামে মানবতা বিরোধী নিষ্ঠুর মব জাস্টিজ বন্ধ হোক

শাসন অনুশাসন— কালনেত্র

দৈনিক কালনেত্র
  • প্রকাশিত: শনিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৪
  • ১৭৮ বার পড়া হয়েছে

শাসন-অনুশাসন

সম্পাদকীয়◾ অদ্ভুত এক কুণ্ডলিঘরে ফেঁসে যাওয়া বিশাল অজগরের মতো নিজেই নিজের বৃত্তে আটক সময় খেলছে আমাদের নিয়ে। আমরা হাঁসফাঁস যতটা না গরমে, তার চেয়ে বেশি এই বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আমার চরম পিপাসায়। যে পিপাসার কোনো ক্লান্তি নেই, শ্রান্তি নেই, ক্ষান্ত দেওয়ার বা শান্ত হওয়ার কোনো প্রকট প্রচেষ্টাও নেই। যেন অভ্যস্ত হয়ে গেছি আমরা সবাই এই শেকলের ধকল সইতে সইতে। উপরন্তু সাজিয়ে তোলারই নানা আয়োজন; এই শেকলের দেয়ালকেই! কখনো গান দিয়ে, কখনো কথা দিয়ে, কখনো লেখা, শব্দমালা, সুর, পঙক্তি বা নিছক ভাবনার পুষ্পরাজি দিয়ে। যেন ছিঁড়ে বেরিয়ে আসার যুদ্ধে হার মেনে এখন এখানেই শেষ পর্যন্ত টিকে যাওয়ার আপ্রাণ বুজরুকি। এসব করতে কি মন চায় নাকি আত্মা টানে? না হোক, তবু আমাদের জোর করতে হয় নিজের ওপর, অন্যের ওপর। আমাদের বানাতে হয় কাঠামো, গড়তে হয় নীতিমালা, করতে হয় শাসন, নিয়ন্ত্রণ, স্থাপন করতে হয় আইন-কানুন। আমরা নিজেকে না চাওয়া দম বন্ধ করা এই পৃথিবীতে ঠিকঠাক খাপ খাওয়ানোর জন্য একটা গালভারী শব্দও ফ্রেমবন্দী করেছি। শৃঙ্খলা।
এই শৃঙ্খলের শেকলে শৃঙ্খলিত অবস্থায় পাক খেতে খেতে আমাদের ভেতর মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে আরেকটি বোধ- ‘মানি না’, মানব না’ কিংবা ‘পরোয়া করি না’, চলতি হাওয়ায় ‘ডোন্ট কেয়ার’ ভাব।
এই যে বারণ নিয়ন্ত্রণের ঘেরাটোপে কেয়ার না করার জেদ এবং শৃঙ্খলের শেকলে ডানা ঝাপটানো ঔদ্ধত্য–এই দুইয়ের ভেতর তপ্ত-শীতল যুদ্ধ—তারই ফলাফল প্রবল রক্তক্ষরণ আর পরস্পরকে, নিয়ম-নীতি আর প্রতিষ্ঠানকে তো বটেই, ব্যক্তিকেও এমনকি অনুভূতিকেও নাকচ করে দেওয়ার বাড়তি উপরি আরোপিত জিঘাংসা। যারই ফলাফল আজকের দিনে চতুর্পাশে এত হানাহানি, এত কূটকাচালি, এত এত নেতিবাচক প্রবৃত্তি আর হেসে হেসে উড়িয়ে দেওয়ার বেহায়াপনা।
সবকিছু ভেঙেচুরে, ছিঁড়ে-ছুড়ে ধ্বংস করে দিতে না পারার অসহায়ত্ব আর রাগের ফলেই কি আরও বেশি করে আঘাত হানার আত্মঘাতী আক্রমণ?
কেবল শাসন আর শৃঙ্খল, বারণ আর নিয়ন্ত্রণ। কেবল গণিত, কেবলই কাঠামো, কেবলই নিজের মতো নয়, এমন একটা ছাঁচে এঁটে সাওয়ার ক্ষোভ।
তা তবে করবটা কী? যাব কোথায়? বাঁচব কী করে?
শাসনের অতিশায়নে আমরা ভুলতে বসেছি যে অনুশাসন বলেও একটা শব্দ আছে। সে কি আমাদের দোষ, আমাদের পরাজয় নাকি এটাই এই দড়ি-টানাটানির ফলাফল?

তাহলে কোন দিকে যাব? একটা না একটা দিকে তো ঝুঁকতে হবে। দড়ির দুই প্রান্তের মাঝখানে কেন্দ্রে কি থাকা যায়? যদি থাকতে না পারি দড়ির বেপরোয়া নামক প্রান্তে, তবে কি লেজ গুটিয়ে এগিয়ে যাব খাঁচা নামক বাক্সে?
ব্যাপারটা অতটা সহজ নয়, যতটা সহজে বলা যায় বা ভাবা যায়। ব্যাপারটা আবার অতটা কঠিনও নয়, যতটা কঠিন মনে হয়। আচ্ছা, অনেক কঠিন কথা হলো। এবার একটু সহজ করে বলি।
আমরা, মানে মানুষেরা বা প্রাণীরা বা পুরো জীবজগৎ বা জড়জগৎও কিছু অলিখিত নিয়ম-কানুনের ভেতর দিয়ে চলি। আবার কিছু লিখিত, কিছু প্রচলিত। কিছু আবার আরোপিতও। কিছু সহজ, কিছু কঠিন। কিছু বপন করা হয় থাকে, কিছু আবার রোপণও করা হয়। কিছু উৎপাটন করা যায় সমূল, কিছু অবার কোনোভাবেই উপড়ে ফেলা যায় না জন্মদাগের মতো।
জন্ম নেওয়ার, বেড়ে ওঠার, বেঁচে থাকার এই দোলাচলে কখনো আরাম লাগে, কখনো আবার লাগে না।
আমার নিজের কথাই বলি। নিয়ম-কানুনের ধার ধারার লোক আমি নই। শাসন করবে আমাকে কেউ, এমনটা বিরল। কারণ, বাধা, নিয়ন্ত্রণ…. এসব শব্দের খুব একটা প্রয়োজন নেই আমার জন্য। শৃঙ্খলিত থাকাটা আমার ধাতেই নেই একদম। মানে যাকে বলে মুক্ত বিহঙ্গ আরকি। নানা রকম বৃক্ষের ফল খেয়ে ডানা দুটোও পোক্ত হয়েছে বড়। নজরুলের ভাষায়, ‘আমি নৃত্যপাগল ছন্দ। আমি মুক্ত জীবনানন্দ।’
ওই দেখো, কিতাবি বুলি আউড়ে ফেললাম যে বড়। নজবুল আওড়ানো লোকও তো আমি নই। আমার যে নেশা সুকুমার রায়ের।
‘আজকে আমার মনের মাঝে
ধাঁই ধপাধপ তবলা বাজে
ছুটলে কথা থামায় কে
আজকে ঠেকায় আমায় কে?’
তা এই যে ঠেকানোর, থামানোর কেউ নেই, তা বলে কি এই উন্মাদনার কোনো শেষ নেই? আছে বৈকি। ক্লান্ত হলে যন্ত্রও তো চায় বিরাম।

গতিশীল বস্তুও থামে একসময়, পাখিও গুটায় ডানা। এই যে ক্লান্তি, এ তো নিয়ন, এ একটা প্রক্রিয়া, এটা খেয়াল-খুশি নয়, এটাই আবহমান।
অর্থাৎ গতির বিপরীতে নয়, বরং পাশেই থাকে জড়তা।
ঠিক যেমন শাসনের ঠিক পাশেই থাকে অনুশাসন। শৃঙ্খলা কেবল শৃঙ্খলিতই করে না, আন্দোলিতও করে।
আবার কঠিন করে ফেলছি বোধ হয়।
রবি ঠাকুর কত সহজেই না বলেছেন, সহজ কথা। যায় না বলা সহজে।
আচ্ছা, কেন বলা যায় না? কারণ, ওই যে অনুশাসন, যা কোথাও লেখা নেই।
মানে, চাইলেই তো আমি সহজ করে বয়োজ্যেষ্ঠ কাউকে বলে বসতে পারব না, মূলত বলব না,‘আরে মিয়া, জামাটা তো সেই মানাইছে আপনেরে।’ এভাবে বললে কেউ না কেউ তো বারণ করবেই আমাকে, শাসনও করবে। কিন্তু আমি তা মানব কেন? আমি তো এভাবে ইয়ার-দোস্ত, বন্ধুদের সাথে কথা বলিই। এভাবে বলা আরাম। জোশ লাগে।
কিন্তু তবু আমি বলব না। কারণ, বলাটা আমার আসবে না।
কেউ শিখিয়ে দেয়নি। তবে এতগুলো বছর ধরে আমি শুনেছি, দেখেছি, বড়দের সাথে এভাবে কেউ কথা বলে না। এটাকে বলে বোঝাপড়া।
আমি চাইলেই রঙিন ঝলমলে পোশাক পরে শোকের বাড়িতে যাব না। চাইলেই কারও মৃত্যুর কথা শুনে খ্যাক খ্যাক করে হাসব না। চাইলেই কারও বাড়িতে বেড়াতে গেলে সুন্দর একটা শো-পিস কাউকে না বলে উঠিয়ে নিয়ে আসব না। চাইলেই ঢিল ছুড়ে মারব না পথচলতি যেকোনো মানুষ বা কুকুর-বেড়ালকে।
চাইলেই পরীক্ষার হলে ঘণ্টাখানেক পরে ঢুকব না বা পরীক্ষার সময় শেষ হয়ে যাওয়ার পরও ঘণ্টাখানেক বসে থাকব না।
আমি যতই নৃত্যপাগল ছন্দ হই না কেন, হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের সামনে ঘুঙুর পরে যাব না। মুক্ত জীবনানন্দ হলেও ঘুমন্ত শিশু, বৃদ্ধ বা অসুস্থ মানুষের পাশে উচ্চরবে চিৎকার করব না। অন্তত সচেতনে নয়।

এগুলো করলে বা না করলেই যে আমার কিছু আসবে–যাবে, তা নয়। কিন্তু করব না। কারণ এসব ভেতর থেকেই আসবে না। এটাকে বলে কাণ্ডজ্ঞান। চলতি ভাষায়, আক্কেল।
চিরকাল দেখে এসেছি, বাবা, আর ছেলে দুজনই জানে যে দুজনই সিগারেট আয়, কিন্তু কেউ কারও সামনে খায় না। লুকিয়ে খায় বা দূরে গিয়ে খায়।
অসাবধানে ধরা পড়ে যাওয়াটা তো অলক্ষে বসে ঈশ্বরের হাসির উপলক্ষ।
যা থেক, মোটের ওপর কথা হলো, কখন কী করতে হয়, হয় না। বলতে হয়, হয় না… শুধু কী নয়… কীভাবেও।
কীভাবে কথা বলতে হয়, কোন শব্দ উচ্চারণ করতে হয়, কীভাবে চলতে হয়, কীভাবে তাকাতে হয়, তা স্থান, কাল ও পাত্রভেদে নির্ধারণ করতে হয়।
এসব বোধ ভেতর থেকে আসে। অলিখিত এসব উপলব্ধির নামই হলো অনুশাসন। যাদের এটুকু থাকে না, তাদের জন্যই প্রয়োজন হয় শাসনের। যেটা ভালো কিছু নয়।

আসাদ ঠাকুর

কে/সিআর/২৪

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
© 𝐰𝐰𝐰.𝐤𝐚𝐚𝐥𝐧𝐞𝐭𝐫𝐨.𝐜𝐨𝐦
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট