কমলগঞ্জ উপজেলায় স্কুল শিক্ষিকা রোজিনা হত্যার খুনীদের গ্রেফতার ও ফাসির দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও থানার সামনে অবস্থান কর্মসূচী পালিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) দুপুর ১২টায় উপজেলা চৌমুহনা চত্বরে উপজেলা কিন্ডারগার্ডেন এসোসিয়েশন ও এলাকাবাসীর আয়োজনে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জের ধরে স্কুল শিক্ষিকা রোজিনা বেগমকে হত্যার প্রতিবাদে উপজেলা কিন্ডারগার্ডেন এসোসিয়েশনের সভাপতি সাংবাদিক মুজিবুর রহমান রঞ্জুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন মাধবপুর ইউপি সদস্য মোতাহের আলী, উপজেলা কিন্ডারগার্ডেন এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোশাহীদ আলী, কমলগঞ্জ প্রেসক্লাবের আহবায়ক এম, এ, ওয়াহিদ রুলু, উপজেলা ইসলামী ছাত্র শিবিরের সভাপতি তানভীর রায়হান ওয়াসিম, কমলগঞ্জ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি নূরুল মোহাইমীন মিল্টন, সাংবাদিক সালাহউদ্দিন শুভ, শিক্ষক নিরঞ্জন দেব, মাওলানা খায়রুল ইসলাম, নিহত স্কুল শিক্ষিকা রোজিনা বেগমের বড়ভাই শাহাজান আহমদ ও একমাত্র ছেলে ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী রেজওয়ান আহমদ প্রমুখ।
মানববন্ধন শেষে উপজেলা কিন্ডারগার্ডেন এসোসিয়েশন ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে এক বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিল শেষে কমলগঞ্জ থানার প্রধান ফটকে অবস্থান নেন বিক্ষুদ্ধ লোকজন। অবস্থান গ্রহনের প্রায় ১০ মিনিট পর থানা থেকে একজন উপ-পরিদর্শক এসে দ্রুত বাকী আসামীদের গ্রেফতারের আশ্বাস প্রদান করলে বিক্ষুদ্ধ লোকজন স্থান ত্যাগ করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মাধবপুর ইউনিয়নের ভাসানীগাঁও নবদূত পাঠশালা স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ও নারী উদ্যোক্তা রোজিনা বেগম (৩৪)কে কূপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ইতিমধ্যে ৪ জন আসামী গ্রেফতার হলেও প্রধান আসামী রেজাউল করিম সাগরসহ অন্য একজনকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ফলে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত খুনীদের গ্রেফতার না করলে প্রয়োজনে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়।
উল্লেখ্য, আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে গত ২৬ মে সকাল ১০টায় ভাসানীগাঁও গ্রামে ভেকু মেশিন দিয়ে কৃষিজমির মাটি কাটাচ্ছিলেন স্থানীয় আব্দুর রহিম ও তার ছেলে রেজাউল করিম সাগর।
খবর পেয়ে নিহত রোজিনার বোনজামাই জালাল মিয়া প্রতিপক্ষকে আপত্তিকৃত জমিতে মাটি কাটায় বাঁধা দিলে দা দিয়ে কূপিয়ে জালাল আহমেদকে গুরুতর জখম করে। জালাল আহমদকে রক্ষায় হারুন মিয়া, তার স্ত্রী নুরুন নাহার লুবনা ও ছোট বোন শিক্ষিকা রোজিনা বেগম দৌঁড়ে সেখানে গেলে দা ও বল্লম দিয়ে সবাইকে এলোপাতাড়ি কূপিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন। পরে স্থানীয়রা আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোজিনাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত রোজিনার ১০ বছর বয়সী একমাত্র শিশু সন্তানটিও বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। গ্রামেও চলছে শোকের মাতম।
এ ঘটনায় রোজিনা বেগমের বড় ভাই শাহজাহান আহমদ বাদী হয়ে কমলগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে প্রধান আসামী রেজাউল করিম সাগরসহ অপর ২জনকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ফলে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু জাফর মো. মাহফুজুল কবির বলেন, স্কুল শিক্ষিকা রোজিনা বেগমের মামলায় ইতিমধ্যে ৪ জন গ্রেফতার হয়েছেন এবং প্রধান আসামীকেও গ্রেফতারের জোর চেষ্টা চলছে।
দ.ক.সিআর.২৫