➖
মোঃ আরিফুজ্জামান সুহেল
বাংলাদেশ ২০১৮-২০২০ সালে ছয় ধাপে মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের তালিকা দেয়। সেই তালিকায় থাকা ৮ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে মিয়ানমার ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত যাওয়ার যোগ্য বলে শনাক্ত করেছে। এ ছাড়া চূড়ান্ত যাচাই-বাছাইয়ের পর্যায়ে ৭০ হাজার রোহিঙ্গার নাম ও ছবি আরও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
২০২০ সালের ঘটনা এখন মিয়ানমার ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা ফিরিয়ে নিতে রাজি হলো কেনো? আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ইন্টারন্যাশনাল ফিগার বলো? বিষয়টি কি এমন, এতোবড় মানুষের সামনে মিয়ানমার বাধ্য হয়ে মেনে নিয়েছে? বিষয়গুলো একটু ভাবুন। যদি মিয়ানমার তার দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয় এর থেকে সুসংবাদ আর হতে পারে না। সেটা শুধু বাংলাদেশীদের জন্য সুসংবাদ না,আমাদের থেকে বেশি আনন্দের খবর ক্যাম্পে থাকা রোাহিঙ্গাদের জন্য।
এখন মূল পয়েন্ট হলো রোহিঙ্গাদের কোথায় ফিরিয়ে নেবে মিয়ানমার সরকার? রাখাইনে। রাখাইনের রাজধানী সিয়েত্তা ছাড়া সবগুলো পয়েন্ট, সবটুকু ভূমি মিয়ানমারের বিদ্রোহী গ্রুপ আরাকান আর্মির দখলে। সিয়েত্তার সাথে আবার বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে অনেকদুরে। আমি যে ডেটা দিচ্ছি সেটা গত ডিসেম্বরের,তারপরে আরও আপডেট থাকার কথা।আরাকন আর্মি স্বাধীন আরাকান রাজ্য ঘোষণার পর্যায় চলে গেছে।
যে শহর দিয়ে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে প্রবেশ করবে সেই মুংডু গত বছর দখল করে নেয় আরাকান আর্মি। মিয়ানমার ও বাংলাদেশের ২৭০ কিমি (১৭০ মাইল) সীমান্ত এখন পুরোপুরি আরাকান আর্মির দখলে।
এ পরিস্থিতিতে মিয়ানমার দাবি করছে যে তারা ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা তাদের দেশে ফেরত নেবে। আমার একদম বেসিক প্রশ্ন, মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের কোথায় রাখবে? যদি রাখাইনে রাখে তাহলে সেটাতো বিদ্রোহীদের দখলে,মিয়ানমার সরকার কোনভাবে পারবে না।আর এটা নিশ্চিত থাকেন প্রায় দুই লাখ লোককে মিয়ানমার সরকার নতুন কোনো ভূমিতে রাখবে না,সেটাতে রোাহিঙ্গারা রাজিও হবে না। তাহলে যে ভূমি মিয়ানমার সরকারের দখলেই নেই সে ভূমিতে রোহিঙ্গাদের কীভাবে ফিরিয়ে নেবে দেশটির সরকার? যে মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশের কোনো সীমান্ত এখন আর নেই,মানে তারা প্রতিবেশিও না,সেখানে ডিফ্যাক্টো সরকার হলো আরাকান আর্মি সেই রাখাইন রাজ্য রোহিঙ্গাদের পাঠাতে কথা বলছি মিয়ানমার নামে ভিন্ন একটা দেশের সাথে!! এটা মশকারা হলো না?!!
আর একজন রোহিঙ্গাকে তার ইচ্ছের বাইরে ফেরত পাঠাতে পারবে না আমাদের দেশের সরকার। যদি বাংলাদেশকে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে হয় তাহলে কথা বলতে হবে আরাকান আর্মির সাথে,সেটা আবার ঝুকিপূর্ণ এবং কঠিন কাজ। মিয়ানমারের বিদ্রোহী সামলাতে কি বাংলাদেশকে এই গৃহযুদ্ধের অংশ বানাতে চায় মিয়ানমার ও আন্তর্জাতিক শক্তি? অনেক অনেক লজিক্যাল প্রশ্ন। আগেই আনন্দে জ্ঞান হারায়েন না বরং সজাগ থাকুন,সতর্ক থাকুন।
দ.ক.সিআর.২৫