হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হঠাৎ অভিযানে চিকিৎসা সেবা, খাবার সরবরাহ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে নানামুখী অনিয়মের চিত্র উঠে এসেছে।
মঙ্গলবার ২৫ নভেম্ব এই অভিযানে রোগীসেবা ব্যবস্থার পর্যায়জুড়ে দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে বলে নিশ্চিত করেছে দুদক।
দূদকের তথ্য মতে, রোগীদের জন্য বরাদ্দ প্রতিদিন ১৭০ গ্রাম মাংসের বিপরীতে সরবরাহ করা হচ্ছিল মাত্র ৭০–৭৫ গ্রাম। দীর্ঘদিন ধরে খাবার সরবরাহে এই অনিয়ম চলছে বলে অভিযোগ করেছেন রোগীদের স্বজনরাও।
গণশুনানিতে অভিযোগ উঠেছিল সরকারি নির্ধারিত ৫ টাকার বদলে ১০ টাকা ফি নেওয়ার সত্যতাও অভিযানে মেলে। এক্সরে বিভাগের হিসাব- নিকাশেও অসামঞ্জস্যতা পাওয়া যায়। হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ময়লা-আবর্জনা জমে থাকা এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় চরম অনীহাও নজরে আসে দূদক কর্মকর্তাদের।
গাইনি ও মেডিসিন ইউনিটে কর্মঘণ্টায় চিকিৎসকদের অনুপস্থিতির অভিযোগও সত্য বলে নিশ্চিত হয় দুদক। যদিও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা দাবি করেন, তারা হাসপাতালে থেকেই রোগী দেখছিলেন তবে উপস্থিতির প্রমাণ দেখাতে পারেননি।
এছাড়া সরকারি মজুত ওষুধ থাকা সত্ত্বেও রোগীদের বাইরে থেকে ওষুধ কিনে আনতে বলা, হাসপাতালের সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও পাশের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অতিরিক্ত খরচে পরীক্ষা করানো এবং দালালচক্রের সক্রিয়তার অসংখ্য অভিযোগও অভিযানে প্রমাণিত হয়।
দুদক কর্মকর্তা আরশেদ আলী বলেন, গণশুনানির অভিযোগের ভিত্তিতে এ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে অধিকাংশ অভিযোগই সত্য প্রমাণিত হয়েছে। দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযানের পর জেলা জুড়ে সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি ও আশার সঞ্চার হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা এবং হাসপাতালের সার্বিক সেবায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা।
দুদকের এই অভিযান স্বাস্থ্যসেবা খাতে অনিয়ম মোকাবিলায় একটি শক্ত বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
দ.ক.সিআর.২৫