অনেক সময় শিশুর জেদ দেখলে আমরা বিরক্ত হই। ভাবি— কেন কথা শুনছে না! কিন্তু সত্য হলো, শিশুর জেদ তার বুদ্ধিবিকাশেরই শক্তিশালী লক্ষণ।
জেদ মানে শিশুটি ভাবতে শিখছে। যখন সে “না” বলে বা নিজের মতামত ধরে রাখে, তখন সে বোঝায়—“আমিও বুঝি, আমিও সিদ্ধান্ত নিতে চাই।” এই স্বাধীন চিন্তাই তাকে ভবিষ্যতে আত্মবিশ্বাসী মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে।
অভিভাবকের প্রথম দায়িত্ব শান্ত থাকা। শিশুর জেদ যত বাড়ে, আমাদের রাগ তত বাড়ে। কিন্তু রাগ দেখালে পরিস্থিতি খারাপই হয়। শান্ত, ধীর স্বরে কথা বললে শিশুরাও নরম হয়ে আসে। অনেক সময় আপনার স্থির মুখটাই কাজ করে।
জেদ সামলানোর সহজ কৌশল
১) খেলার ছলে উল্টো কথা বলা (Reverse Psychology)
নিষেধ করলে শিশুরা উল্টো সেটাই করতে চায়। যেমন— “আজ তুমি দুধ খেও না।”
শিশু—“না, আমি খাব!”
কারণ সে নিজের সিদ্ধান্তে দৃঢ় থাকতে ভালোবাসে।
২) ছোট্ট “বিকল্প” দেওয়া
আদেশ শিশুরা পছন্দ করে না, কিন্তু তারা পছন্দ করে নিজে বেছে নিতে। “দুধ খাও”— এই আদেশ সে না-ও মানতে পারে।
কিন্তু—“দুধ গরম খাবে, নাকি ঠান্ডা?” সাথে সাথে একটা বেছে নেবে। সিদ্ধান্ত তার, কাজটাও হয়ে গেল—দু’পক্ষেরই জয়।
এক মা তার শিশুকে বাইরে নিতে পারছিলেন না। শিশু জেদ করছিল, “যাবো না।”
মা মজা করে বললেন, “বাইরে গেলে এক চোখ বন্ধ করে যাবে, না দুইটা?”
শিশু হেসে বলল, “দুইটা!”
মুহূর্তেই জেদ বদলে গেল আনন্দে।
জেদ—একটি স্বাভাবিক বিকাশ ধাপ—
দুই থেকে পাঁচ বছর বয়সে শিশুরা সবচেয়ে বেশি জেদ করে, কারণ তখনই তারা স্বাধীন হতে শেখে। জেদ দমন নয়—বোঝা প্রয়োজন। কারণ জেদ মানে শুধু প্রতিবাদ নয়, এটি চিন্তার প্রকাশ। আপনি যদি সেই চিন্তাকে সম্মান করেন, ধৈর্য দেখান— তাহলে এই জেদী শিশুই একদিন হবে আত্মবিশ্বাসী, সচেতন, দৃঢ় মানসিকতার একজন মানুষ।
দ.ক.সিআর.২৫