আসাদ ঠাকুর, অমনিবাস
চুনারুঘাটের বহুল আলোচিত ও অনিয়ম-দুর্নীতির নানা অভিযোগে অভিযুক্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজনীন সুলতানার বিরুদ্ধে এবার বদলির পরও দায়িত্ব না ছাড়ার অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার ক্ষুব্ধ কয়েকজন প্রধান শিক্ষক শনিবার (১৫ নভেম্বর) নাজনীন সুলতানাকে চুনারুঘাটের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য হুকমি স্বরূপ মনে করে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে বদলির আদেশ জারি হওয়ার পরও কর্মস্থল ছাড়তে নারাজ চুনারুঘাট উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নাজনীন সুলতানা। অভিযোগ রয়েছে, তিনি বিভিন্ন কৌশলে চুনারুঘাটেই থেকে যাওয়ার অপচেষ্টা করছেন।
এর আগে— প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রদত্ত নীতিমালাকে তোয়াক্কা না করে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও বিক্রির অভিযোগ উঠেছিল নাজনিন সুলতানার বিরোদ্ধে।
এছাড়াও চুনারুঘাট উপজেলার ১৭০টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অভিযোগ তুলেছিলেন, নাজনীন সুলতানা চুনারুঘাটে যোগদানের পর থেকেই নিয়মিত গড় হাজিরা দিতেন। সপ্তাহে গড়ে ২ দিন অফিস করতেন এবং কোনো কোনো সময় পুরো সপ্তাহেই অনুপস্থিত থাকতেন। তিনি বিদ্যালয়ের স্লিপের বরাদ্দকৃত টাকার চেকে স্বাক্ষর নিতে এটিআইদের মাধ্যমে ৫-১০ হাজার টাকা উৎকোচ নিতেন।
নাজনিন সুলতানার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় তিন দফায় জেলা, বিভাগ ও অধিদপ্তরীয় তদন্ত শেষে সম্প্রতি তাকে চুনারুঘাট থেকে মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলায় বদলি করা হয়।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক স্বাক্ষরিত আদেশে গত ১১ নভেম্বর বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী ১৩ নভেম্বর ছিল তার শেষ কর্মদিবস।
জানা যায়, নাজনীন সুলতানা পরবর্তি কর্মস্থলে না গিয়ে চিকিৎসা ছুটির আবেদন অফিস সহকারীর কাছে রেখে চলে যান। বিষয়টি নিয়ে উপজেলায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার জয় কুমার জানান, “আমরা দু’জন সহকারী শিক্ষা অফিসার চুনারুঘাটে দায়িত্ব পালন করছি। কিন্তু নাজনীন ম্যাডাম আমাদের কাউকেই দায়িত্বভার দেননি।”
অন্যদিকে, স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “তার বিরুদ্ধে বড় বড় দুর্নীতির অভিযোগ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর তদন্তের ভিত্তিতেই তাকে বদলি করা হয়েছে। এখন তার এখানে থাকা সমিচীন নয়।”
শিক্ষকদের মতে, বদলির পরও তিনি বহাল থাকলে চুনারুঘাটের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
দ.ক.সিআর.২৫