➖
কালনেত্র ডেস্ক◾
১৮৯৬ সালে স্থাপিত ফুলতলা চা-বাগানের অবস্থান মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নে। পাঁচ মাসের বেশি সময় বাগান বন্ধ থাকায় প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে গেছেন। এ পরিস্থিতিতে বাগানের শ্রমিকদের কেউ কেউ আশপাশের বিভিন্ন বাগানে গিয়ে স্বল্প মজুরিতে চায়ের কুঁড়ি তোলেন। পেশা বদলে কেউ কেউ বাইরে দিনমজুরের কাজ করছেন।
চার-পাঁচ বছর ধরে ফুলতলা বাগানটি ধুঁকে ধুঁকে চলছিল বলে জানান ১০-১২ জন শ্রমিক। তাঁদের ভাষ্য, শ্রমিকেরা নিয়মিত মজুরি পাচ্ছিলেন না। এরই মধ্যে গত বছরের ৯ আগস্ট কর্তৃপক্ষ নানা কারণ দেখিয়ে দুই মাসের জন্য বাগানের সব কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করে। তখন চায়ের ভরা মৌসুম চলছিল। এ পরিস্থিতিতে চা নষ্টের আশঙ্কা ও জীবন-জীবিকার কথা বিবেচনা করে শ্রমিকসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মিলে বাগানটির কার্যক্রম অব্যাহত রাখার উদ্যোগ নেন। পাশাপাশি সংকট নিরসনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু এতেও সংকট ঘোচেনি। চা বিক্রিতে জটিলতা সৃষ্টির কারণে শ্রমিকদের সাপ্তাহিক মজুরি আটকা পড়ে। একপর্যায়ে বন্ধ হয়ে যায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাও। এ পরিস্থিতিতে বাগানের শ্রমিকেরা ১৫ ডিসেম্বর থেকে কাজ বন্ধ করে দেন।
বাগানটিতেই জন্ম ও বেড়ে ওঠা শ্রমিক পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি রবি বুনারজির। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘অতীতে এ রকম অব্যবস্থাপনা দেখিনি। এমনিতেই ১৭ সপ্তাহের মজুরি-রেশন বাকি। বাগান বন্ধের পর কয়েক মাস ধরে খুব বাজে অবস্থা। শ্রমিকদের কাজ নাই, ঘরে খাবার নাই। প্রশাসনের কাছে গিয়েছি, জনপ্রতিনিধিদের কাছে গিয়েছি। কার ভরসায় কাজে নামব?’
আপাতত মালিকপক্ষের কেউই শ্রমিক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন না উল্লেখ করে প্রধান করণিক আবদুল ওয়াদুদ বলেন, ভরা মৌসুমে (জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) বাগানের শুধু শ্রমিকদের প্রতি সপ্তাহের মজুরি পরিশোধে ২২-২৩ লাখ টাকা লাগে। বাকি সময়ে সপ্তাহে লাগে ১৭-১৮ লাখ টাকা। কাজ শুরু হলেও চা প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং নিলামে বিক্রিতে মাসখানেক সময় লেগে যায়। এ সময়ে শ্রমিকদের চার সপ্তাহের (এক মাসে চার সপ্তাহ হিসাবে) মজুরি লাগে। ওই টাকার জোগান কীভাবে হবে, সেটিই বড় বিষয়।
দ.ক.সিআর.২৫