ফয়সল আতিক◾
১৯৭৮ সালে গ্রামীণ কারু ও হস্তশিল্পীদের কর্মসংস্থান ও জীবনমান উন্নয়নের এক পরিকল্পনায় যাত্রা শুরু করে আড়ং। আড়ংয়ের ৬০ শতাংশ পণ্যের জোগান দেন আয়েশা আবেদ ফাউন্ডেশনের কর্মীরা। ফান্ডেশনের সারা দেশে ১৪টা আঞ্চলিক কার্যালয়ের অধীনে ৬৫০টি সাব সেন্টারে উৎপাদনে জড়িয়ে আছেন ৬৫ হাজার শ্রমিক, যাদের শতকরা ৯০ ভাগই নারী।
“প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কাজ করে ৬ থেকে ৭ গজ কাপড় তৈরি করতে পারি। প্রতিগজের জন্য ৩৪ টাকা করে মজুরি পাই" জানান তাঁতকর্মী মালা রানী।খুবই পরিশ্রম সাধ্য তাঁতের মেশিন চালিয়ে দিনে অন্তত দুইশ টাকা আয় করা গেলেও চরকায় সুতা পেঁচিয়ে আয় হয় এর অর্ধেক টাকা।
৩০ বছরের ধরে কাজ করছেন সত্তোরোর্ধ নারী জোছনা বেগম। জোছনা বলেন, চরকা ঘুরিয়ে একশ বান্ডিল সুতা গুছাতে পারলে পারিশ্রমিক ১১৫ টাকা। সারাদিন কাজ করলে সর্বোচ্চ দেড়শ বান্ডিল সুতা পেঁচানো যায়।
তাঁতে স্থায়ী নিয়োগ পেয়ে ড্রাম মাস্টার হিসাবে কর্মরত জিন্নাত আলী বলেন, “তাঁতে যারা কাপড় বুনন করেন তারা স্বাধীনভাবেই কাজ করেন। আমি মেশিনগুলোর সার্বক্ষণিক দায়িত্বে আছি। মাসিক ৫ হাজার ৯৪০ টাকা বেতন নির্ধারিত আছে আমার।” এসব কর্মীদের ৫ শতাংশ নিয়মিত। বাকিরা কাজের বিনিময়ে বেতনের ভিত্তিতে কাজ করেন।
৩০ বছর ধরে কর্মরত সত্তরোর্ধ কাঠমিস্ত্রি পরেশ সূত্র ধর বলেন, একটি ফোল্ডিং চেয়ার সম্পূর্ণ রূপে ফিনিশিংসহ তৈরি করে দিতে পারলে মজুরি আসে ২২৫ টাকা। হাত চালিয়ে কাজ করলে দিনে দুটি চেয়ারও তৈরি করা যায়।
লিপি আক্তার ও আমিনুল নামের দুই কর্মী জানান, সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কারচুপি গাঁথার কাজ করলে অন্তত আড়াইশ টাকা আয় করা সম্ভব।
একটি কামিজে (TAAGA) সুতার কাজ করার বিনিময়ে ৯৬ টাকা এবং একটি পাঞ্জাবিতে নকশা করার বিনিময়ে ৩৬০ টাকা পাচ্ছেন তারা। অবশ্য একটি পাঞ্জাবির কাজ শেষ করতে অন্তত তিন থেকে চার দিনও সময় লাগে। একদিনেই শেষ করা যায় একটি তাগার জন্য নির্ধারিত হাতের নকশার কাজ।
চায়না নামের এক কারিগর বলেন, ১৯৯১ সাল থেকেই এই কাজে যুক্ত আছেন তিনি। সুই সুতার কাজ করে মাসে অন্তত তিন হাজার টাকা আয় করতে পারছেন তিনি।
( সাংবাদিক ফয়সাল আতিক - Bdnews24 প্রতিবেদন)
দ.ক.সিআর.২৫