1. live@kaalnetro.com : Bertemu : কালনেত্র
  2. info@www.kaalnetro.com : দৈনিক কালনেত্র :
বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ১২:২৮ অপরাহ্ন

প্রসঙ্গ সামাজিক ও মানবিক সংগঠন 

দৈনিক কালনেত্র
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪

সম্পাদকীয়◾

একটি সংগঠন যখন গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সামাজিক হয়ে ওঠে তখন এমনি এমনিই সেই সংগঠন মানবিক মর্যাদা পেয়ে যায়। কিন্তু আমাদের দেশে সামাজিক ও মানবিক সংগঠনের ছড়াছড়ি ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে একসময় নানান কারণে নিস্ক্রিয় হয়ে যেতে দেখা যায়! আমি ব্যক্তিগত ভাবে একসময় নিজ এলাকায় একটি সামাজিক সংগঠন গড়েছিলাম। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই যখন দেখেছি এবং বুঝতে পেরেছি সংগঠনের নেতাদের মতলবি বা স্বার্থের ঘোট পাকাপাকি, তখন ধীরে ধীরে নিজেকে এবং সংগঠনকে গুছিয়ে নিয়েছি নিরাপদ হৃদয়ে!

 

আর কবি-সাহিত্যিকদের সংগঠনের কথা মুখে আনা তো পাপ তুল্য। তেনারা নিজেরা নিজেরা বিচার বিবেচনা করে কবিতার স্বীকৃতি দিয়ে সম্মাননা সহ টিনের ক্রেস্ট তুলে দেন টাকার বিনিময়ে। এভাবেই সাহিত্য নিরবে নিভৃতে পেছন মারা খেয়ে একটি কবি ও সাহিত্যিক উৎপাদন কেন্দ্রে পরিনত হয়।

 

সামাজিক ও মানবিক সংগঠনের বিষয়টাও অনেকটা ওরকম উৎপাদন কেন্দ্রের মতোই। তবে এসব মানবিক সংগঠন কেন্দ্রে উৎপাদিত হয় ধুরন্ধর কৌশল আর কিছু অসামাজিক মানুষ। অসামাজিক বললাম এই কারণে যে- এসব সংগঠনের নেতা পাতি-নেতারা সর্বদা নিজেকে মহান ও সর্বোচ্চ চতুর মনে করেন; তাদের চোখ ও মাথা শরীরের তুলনায় বড় হয়ে যায়, যার ফলে তারা নিজেদের শরীরের মেদ দেখতে পায় না।

 

রাজনৈতিক সংগঠনের ক্ষেত্রে দেখবেন একটি অদ্ভুত ট্রেন্ড চালু হয়েছে! যথা- একসময় বলা হতো জনবান্ধব নেতা, ইদানিং বলা হয় কর্মীবান্ধব নেতা। আরেকটি বিষয় বেশ লক্ষনীয়, ইদানিং দেখা যায় যে, সংগঠন নামক শব্দের সামনে ‘মানবিক’ শব্দটা ব্যবহার করে সংগঠনকে উপস্থাপন করাটা এক প্রকার ফ্যাশানে দাঁড়িয়েছে। অথচ সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এ-ও দেখা গেছে যে, চিহ্নিত মানবিক সংগঠনের কিছু লোকজন সম্পূর্ণ অমানবিক এবং অসামাজিক; তদুপরিও সেসব সংগঠন ওইসব বিতর্কিত অমানবিক-অসামাজিক লোকজন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। কখনো কখনো এধরণের মানবিক সংগঠনগুলো আবার একে অপরের পরিপূরকও হয়ে যায় বটে! আসলে একটা সংগঠন যখন গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সামাজিক হয়ে ওঠে তখনই সেই সংগঠন মানবিক মর্যাদা এমনি এমনি পেয়ে যায়।

 

সামাজিক সংগঠন দুই ক্যাটাগরিতে হতে পারে।
১) পার্লামেন্টেরিয়াল ফর্মে ২) প্রেসিডেন্সিয়াল ফর্মে। সংসদীয় পন্থায় গেলে সেখানে সদস্যদের উপর নির্ভরশীল হতে হয়, কারণ সদস্যরা পারিশ্রমিক ছাড়া। এক্ষেত্রে সদস্য বা নেতা দুর্নীতিবাজ বা দুঃচরিত্র হলে তেমন কিছু করার থাকে না। এবং দেখা যায় কোনো না কোনো স্বার্থ বা অহেতুক মাতব্বরির কারণে নিজেদের মাঝে অন্তর্দাহ শুরু হয়; অকারণে এখানে কথা চালাচালি ও ঘোট-পাকাপাকি বেশি হয়ে থাকে, বিধায় সংসদীয় পন্থার সংগঠন বেশি দিন টেকে না। এই ফর্মে সংগঠনের লোকজন অনেকটা চোরে চোরে মাসতুতো ভাইয়ের মতো। আর স্ট্রেট-ফরোয়ার্ড মানসিকতার মানুষের এসব সংগঠনে টিকে থাকা কঠিন।

 

আর প্রেসিডেন্সিয়াল পন্থায় সংগঠন চালালে তাতে নির্বাহী ক্ষমতা থাকে সরাসরি প্রেসিডেন্টের হাতে, এতে করে সংগঠনের ল এণ্ড অর্ডার দ্রুত কার্যকরী হয়; এবং সদস্যদের উপর নির্ভরশীল হতে হয় না, কিন্তু এই ধরনের সংগঠন চালাতে প্রেসিডেন্টের টাকার জোর থাকতে হবে।

 

মানুষ মাত্রই ভুল ত্রুটি থাকবে- সংগঠনের ক্ষেত্রেও তাই, কিন্তু ইদানিং সামাজিক বা মানবিক সংগঠনের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে, নেতা পাতিনেতাদের ভুল ত্রুটির কোনো জবাবদিহিতা নাই। যার ফলে সদস্যরাও জবাবদিহির ধার ধারে না। এভাবেই সামাজিক সংগঠনগুলো একসময় নামসর্বস্ব হয়ে যাচ্ছে। আর যদি একক ক্ষমতা ও অর্থায়নে সংগঠন চলে তবে যেকোনো ভুল ত্রুটির জবাবদিহি না করে যাবে কোথায়? তবে খুব সত্য কথা হচ্ছে যে, যেকোনো সংগঠন মুখথুবড়ে পড়ে সঠিক নেতৃত্বের অভাবে। সংগঠনের যেকোনো সিদ্ধান্তই হোক না কেনো তা গ্রহণ করতে সর্বস্তরের সদস্য ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের মতামত নেওয়া আবশ্যক।

 

যাইহোক, পরিশেষে একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা মনে করিয়ে দেই- সামাজিক ও মানবিক অধিকাংশ সংগঠন কিন্তু কাজ করে সাধারণ মানুষের টাকায়!

পাবলিকদের বোকা ভাবার কোনো সুযোগ নাই।

 

দ.ক.সিআর.২৪

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
© 𝐰𝐰𝐰.𝐤𝐚𝐚𝐥𝐧𝐞𝐭𝐫𝐨.𝐜𝐨𝐦
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট