আরাফাত শাহীন◾
দ্রুত পরিবর্তনশীল এক সময়ে আমরা অবস্থান করছি। এখানে চোখের পলকে পাল্টে যায় সবকিছু। গতকালও যা আমাদের কাছে প্রয়োজনীয় ছিল, আজ তা বাতিল বলে গণ্য হচ্ছে। আর আগামীকালের কথা তো না-ই বললাম! সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা মানুষের স্বভাবজাত ধর্ম। আমরা নতুন পরিবেশ ও পরিস্থিতির সঙ্গে অতি দ্রুত মানিয়ে নিতে চাই। অনেক সময় এটা প্রয়োজনীয় বটে! তবে এই মানিয়ে নেওয়ার কারণে আমাদের ক্ষতির পরিমাণও কিন্তু একবার চিন্তা করা প্রয়োজন।
একটা উদাহরণ দিলে বিষয়টা স্পষ্ট হয়ে যাবে। বর্তমান যুগ হলো ফ্যাশনের যুগ। প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন মনোমুগ্ধকর উপকরণ আমাদের সামনে এসে হাজির হচ্ছে। এগুলোর একটির চেয়ে অন্যটি নজরকাড়া। এই ফ্যাশনের হাত থেকে আমরা কেউই কিন্তু পালিয়ে থাকতে পারি না। কারণ হলো- আমাদের ঘরে ঘরে স্যাটেলাইট টেলিভিশন পৌঁছে গেছে। তাছাড়া ইন্টারনেটের ব্যবহার এখন এতটাই সহজসাধ্য হয়ে পড়েছে যে আপনি চান অথবা না চান, আপনাকে এর মুখোমুখি হতেই হবে। নিত্যনতুন এই দামী উপকরণ সংগ্রহ করা সবার পক্ষে সম্ভব নয়। যাদের অঢেল টাকা আছে কেবল তারাই এগুলো ব্যবহার করতে পারে। কিন্তু মন তো সবারই আছে। একজন গরিব মানুষের সন্তানেরও এসব উপকরণ ব্যবহার করার শখ হয়। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হতদরিদ্র পরিবার এগুলো সন্তানদের কিনে দিতে পারে না। ফলে স্বভাবতই পারিবারিক অশান্তি বিরাজ করে। এবং ক্ষেত্রবিশেষে এই অশান্তি সীমা অতিক্রম করে যায়।
দুই.
আমরা এমন একটা সময়ে অবস্থান করছি, যখন আমাদের একটা প্রজন্ম সরল পথ থেকে বিচ্যূত হয়ে পথভ্রষ্টতার দিকে এগিয়ে চলছে, হতাশার চোরাবালিতে নিমজ্জিত হয়ে তারা শেষ করে দিচ্ছে নিজেদের অস্তিত্ব। তারা ভাবছে- এই পৃথিবীতে তাদের প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে। ফলে কেউ ধীরে ধীরে আর কেউ চোখের পলকে শেষ করে দিচ্ছে নিজেকে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, মানুষের মধ্যে সর্বত্র একটা শূন্যতা, হাহাকার বিরাজ করছে। কেউ যেন কোনোকিছু পেয়েও সন্তুষ্ট নয়; তার আরও চাই। যার যত বেশি আছে, তার ক্ষুধাও যেন তত বেশি! এই সমস্যা আমাদের নতুন প্রজন্ম- যারা সদ্যই বয়ঃসন্ধিকাল পার করে এসেছে, তাদের জন্য প্রকট হয়ে ধরা দিয়েছে। আমরা যদি একটু খেয়াল করে দেখি তাহলে এর সত্যতা সহজেই অনুভব করতে পারব।
বিগত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে পাবলিক পরীক্ষার পরিমাণ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। একদিকে সৃজনশীল শিক্ষার্থী তৈরির জন্য তোড়জোড় চলছে, আর অপরদিকে পরীক্ষা নামক এক অদ্ভুত বোঝা তাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে সিন্দাবাদের বুড়ো ভূতের মতো। ফলে সমস্যার এই চক্র থেকে তারা কিছুতেই বের হয়ে আসছে পারছে না। একেবারে প্রাথমিক পর্যায় থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত অসংখ্য 'পুলসিরাত' পার হয়ে তাদের আসতে হচ্ছে। এসব পরীক্ষার কোনো একটাতে যদি কেউ সামান্যতম খারাপ করে, তাহলে পরিবার থেকে নেমে আসে সীমাহীন লাঞ্ছনা। সবকিছুতেই বেশি পাওয়ার ইচ্ছা আমাদের ভেতরটাকে বড় নোংরা করে দিয়েছে। আমরা বুঝতে চাই না- প্রতিটা মানুষেরই নিজস্ব সক্ষমতা আছে। তাকে তার বাইরে চাপ দিলে চলবে কেন!
পরীক্ষায় কিংবা জীবনের যে কোনো পর্যায়ে ভালো করার এই যে চাপ, এটা নিতে পারে না অনেকেই। একটা বিষয় আমাদের মাথায় রাখা প্রয়োজন যে, এই নতুন প্রজন্ম খুব বেশি চাপ গ্রহণ করতে পারে না। এর কারণ আসলে কী? আমাদের একটু গভীরভাবে চিন্তাভাবনা করতে হবে। আমার মনে হয়- সবকিছু খুব সহজেই পেয়ে যাওয়ার কারণেই এমনটা হচ্ছে। তাদের কাউকেই কিন্তু কিছু পাওয়ার জন্য পরিশ্রম করতে হচ্ছে না। জন্মের পর থেকেই তো সবকিছু তাদের হাতের নাগালে! আপনি কি কখনো শুনেছেন, কোনো পথশিশু- যে দুমুঠো ভাতের জন্য প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে, সে আত্মহত্যা করেছে? কিংবা জীবনের শুরু থেকেই যাকে সংগ্রাম করতে হয়, সে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে? বিষয়টা এমনই। চাপ নেওয়ার মতো মানসিকতা যাদের তৈরি হয়নি তাদের সামান্য চাপ দিলেই ভেঙে পড়বে। এজন্যই আমাদের শিক্ষার্থীরা অল্প কোনো আঘাতেই ভেঙে পড়ে; তাদের ভেতরে কাজ করে অদ্ভুত এক হাহাকার।
তিন.
আমি এই প্রজন্মের নাম দিয়েছি 'হাহাকার প্রজন্ম'। জগতের কোনো কিছুই এদের হৃদয়ে শান্তি আনতে পারে না। এদের চিন্তা একটাই- আরও চাই, আরও চাই। চাইলেই জগতের সবকিছু যেহেতু পাওয়ার উপায় নেই, তাই এই না পাওয়ার ফলে তারা নিমজ্জিত হয় হতাশার চোরাবালিতে। এই হাহাকার প্রজন্মের সবাই যে তাৎক্ষণিকভাবে নিজেদের ধ্বংস করে দেয় বিষয়টা এমন সরলও নয়। এদের মধ্যে একটা বড় গ্রুপ আরও গুরুতর কাজ করতে শুরু করে। তাদের এই কাজের ফলাফল যেমন ব্যক্তিগত জীবনে প্রভাব ফেলে, তেমনি সমাজের ওপরও এর প্রভাব অত্যন্ত ব্যাপক। হতাশায় নিমজ্জিতদের একটা বড় অংশ রাজনৈতিক দলসমূহে যোগ দেয় এবং একটা সময় সেই দলের শক্তির উৎস হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। তারা যখন দেখে- পরিবার এবং সমাজ থেকে আমার পাওয়ার কিছু নেই, তখন অধিক পাওয়ার লোভে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে থাকে। তারা ভাবে- এভাবেই তাদের উদ্দেশ্য হাসিল করা সম্ভব হবে।
আমরা যদি দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করি তাহলে দেখতে পাবো মিছিল, মিটিং, সমাবেশ কিংবা তথাকথিত বড়ভাইদের মনোরঞ্জনের জন্য এই হাহাকার প্রজন্ম সব সময় মুখিয়ে থাকে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য এদের ব্যবহার করা হয় প্রতিনিয়ত। এই দলের খুব কম সংখ্যকই রাজনৈতিক জ্ঞান রাখে। বড় দলগুলোর জন্য যেহেতু তারা বিরাট এক শক্তি তাই তাদের দলে ধরে রাখার জন্যও বেশ তৎপরতা পরিলক্ষিত হয়। আমার বিশ্লেষণ মতে এভাবেই এই প্রজন্মের হাতে মাদকের মতো ভয়াবহ ব্যাধি পৌঁছে যায়। আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি- কীভাবে রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় মাদক প্রসার লাভ করে। হতাশার অন্ধকারে ডুবে থাকা বিরাট এক জনগোষ্ঠীকে হাতে রাখার জন্য মাদকের চেয়ে কার্যকরী আর কিছু কি থাকতে পারে!
আমাদের এই প্রজন্ম প্রতিনিয়ত অবক্ষয়ের একেবারে শেষ পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে। সমাজ কিংবা রাষ্ট্র তেমন বিশেষ কিছু এদের জন্য করছেও না। আমরা এসব দেখেও না দেখার ভান করছি। হতাশাগ্রস্ত এই তরুণদের একটা বড় অংশ বর্তমানে মোবাইল এবং গেমসের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছে। এদের এই আসক্তি মাদকের চেয়েও ভয়াবহ মনে হয়েছে আমার কাছে। জগতের সমস্ত চিন্তা থেকে মুক্ত হয়ে এরা মোবাইলের স্ক্রিনে ডুবে থাকে সব সময়। এই যে সমাজে এত অবক্ষয়, মানুষের অধঃপতন, অনাচার, অবিচার- এসবের কিছুই এদের বিন্দুমাত্র স্পর্শ করে না। এরা সেই নিরোর মতো- রোম নগরী পুড়ে যাওয়ার সময়ও যে বাঁশি বাজাচ্ছিল আপনমনে! এভাবে নিজেদের হতাশাকে কবর দেওয়া যায় না। পারিবারিক অশান্তি আমাদের আজ এমনভাবে ঘিরে রেখেছে কেউ এদিকে নজর দেওয়ার সময়ও যেন পাচ্ছে না! অথচ নেশায় চুর হয়ে একটা প্রজন্ম পুরোপুরি ধ্বংস হতে বসেছে!
চার.
চিন্তার ক্ষেত্রে আমাদের মধ্যে বিরাট এক শূন্যতা তৈরি হয়েছে। এই রোগে তরুণ, বৃদ্ধ সকলেই আক্রান্ত। কোনোকিছু তলিয়ে দেখার অবকাশ আমাদের একেবারেই নেই। কোনো বিষয়ে একেবারে না জেনে কিংবা ভাসাভাসা জ্ঞান নিয়ে আমরা এমন সব মন্তব্য করে বসি, যা সমাজে তৈরি করে সীমাহীন অস্থিরতা। তবে এখানেও হাহাকার প্রজন্মের জয়জয়কার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আজ আমাদের জীবনের একটা বড় অংশ দখল করে রেখেছে। আমরা জোর করেও একে কাঁধ থেকে নামাতে পারব না। তবে এর ব্যবহারের মধ্যেই আমাদের জাতীয় চরিত্র প্রকটভাবে ফুটে ওঠে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো ঘটনা যখন সামনে আসে, তখন অতি দ্রুত দুটো পক্ষ তৈরি হয়ে যায় এবং নিজেদের মতামত প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে এরা পরস্পরকে তীর্যকভাবে আক্রমণ করে। ক্ষেত্রবিশেষে এটা গালাগালি পর্যন্তও পৌঁছে যায়। অথচ বিষয়টাকে একটু ধৈর্যের সঙ্গে তলিয়ে দেখা উচিত ছিল। কিন্তু আমাদের সে সময় কোথায়!
সাম্প্রতিক সময়ে আমি সবচেয়ে কষ্ট পেয়েছি যে বিষয়টা দেখে তা হলো- কোনো বিশিষ্ট ব্যক্তির মৃত্যুতে 'হা হা' রিঅ্যাক্টের বন্যা। এবং এই প্রতিযোগিতায় আমাদের তরুণ প্রজন্ম পুরোপুরি সোচ্চার। যেন এটা ছাড়া তাদের আর কোনো কাজই নেই! একজন মানুষের মৃত্যুতে কেন খুশি হতে হবে এই বিষয়টা আমার মাথায় কিছুতেই ঢোকে না। একজনের সঙ্গে আমার মতের মিল না-ই থাকতে পারে; তাই বলে তার মৃত্যুর সময়ে আমি খুশিতে উদ্বেলিত হয়ে উঠবো! তবে এই জায়গাটাতে আলোচনার অবকাশ রয়েছে। এই যে সংকট এর পেছনে সবচেয়ে বেশি দায়ী আমাদের দেশের নোংরা রাজনীতি। তরুণদের এই পথ দেখিয়েছে রাজনৈতিক নেতারা। এমনকি তারাও প্রতিপক্ষের মৃত্যুতে খুশি হয়ে ওঠেন এবং তা গোপনও থাকে না! বিপক্ষ দলের কারও মৃত্যুতে তাকে নিয়ে ঠাট্টা করা কিংবা মিষ্টি বিতরণ করে উল্লাসে মেতে ওঠার শিক্ষা তো রাজনীতিবিদরাই দিয়েছেন! আরেকটা বিষয়ও এখানে মাথায় রাখা প্রয়োজন- জনগণ তাদের প্রতিবাদের শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। যে কোনো বিষয়ে প্রতিবাদ করার সুযোগ খুবই সীমিত। তাই আমার মনে হয়- যারা কারও মৃত্যুতে খুশি হয়ে ওঠে তারা ধারণা করে, এভাবেই বুঝি প্রতিবাদে শামিল হতে পারছে!
পাঁচ.
আমাদের এই প্রজন্মের রুচিবোধ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আহমদ ছফা তাঁর 'যদ্যপি আমার গুরু' বইয়ে জাতীয় অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাকের একটা বক্তব্য উল্লেখ করেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, 'কী খায়, কী পড়ে এই দুইডা জিনিস না জানলে একটা জাতির কোনো কিছু জানন যায় না।' কথাটা কত গভীরভাবে সত্য আমরা সেটা অনুধাবনের চেষ্টা করবো। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পার করেছি আমরা। বাংলা ভাষা এবং সাহিত্য এখন অতীতের যে-কোনো সময়ের চেয়ে সমৃদ্ধ। বাংলা ভাষায় রচিত হয়েছে বহু কালজয়ী গ্রন্থ। কিন্তু আমাদের তরুণ প্রজন্ম ঠিক কোনদিকে ছুটছে? তারা কি এই বইগুলো পাঠের মাধ্যমে নিজেদের সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলছে? বাস্তবতা এখানে একটু কঠিনই বটে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের জনপ্রিয় করে তোলার পর অনেকেই আজকাল বই লিখছেন। আমাদের তরুণ প্রজন্ম বর্তমানে এসব লেখকদের পেছনেই ছুটে সময় পার করছে। এই লেখকদের সবাই যে সমৃদ্ধ সাহিত্য রচনা করে বাংলা ভাষার অশেষ খেদমত করছে, বিষয়টা কিন্তু মোটেও তেমন নয়। বরং অনেকেই বাংলা সাহিত্যের সঙ্গে তামাশা করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
খাওয়ার রুচির কথা এলে বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটা বিষয়ে প্রতি লক্ষ করা যেতে পারে। আমাদের সবার রুচি এবং অভ্যাস কিন্তু একরকম নয়। একজনের কাছে যেটা বিশেষ পছন্দের অপরজনের কাছে সেটাই অপছন্দের হতে পারে। এটা তো দোষের কিছু নয়। কিন্তু সমস্যা তখনই সৃষ্টি হয়- যখন কেউ অন্যের রুচিবোধ নিয়ে মজা করা শুরু করে এবং ক্ষেত্রবিশেষে সেটা সীমা অতিক্রম করে যায়। আমরা দেখেছি- অনেক সময় কৃষিপণ্য নিয়ে নেতিবাচকভাবে মজা করা হয়। এতে করে যে কৃষককেই একপ্রকার অবহেলা-অবজ্ঞা করা হচ্ছে, সেটা কি একবারও চিন্তা করে দেখেছি! মাথার ঘাম পায়ে ফেলে, নিজেদের জীবনকে নিঃশেষ করে দিয়ে জাতির জন্য যারা খাবার উৎপাদন করেন প্রতিনিয়ত, তাদের নিয়ে মজা করা যায় না। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান তো তারাই! এই প্রজন্মের অনেকেই না বুঝে কাজটা করছে। তাদের ফিরে আসা উচিত।
আমার চোখে আরেকটা সমস্যা বেশ গভীরভাবে ধরা পড়েছে। এবং আমি মনে করি, এটাই সকল সমস্যার মূল। আমাদের ছেলেমেয়েরা পরিবার থেকে দিনদিন দূরে সরে যাচ্ছে। পিতামাতা কিংবা ভাইবোনের সঙ্গে যদি সম্পর্ক সুগভীর না হয়, তাহলে পথভ্রষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। আমরা অনেক সময় একটা অতি গুরুত্বপূর্ণ কথা ভুলে বসে থাকি। তা হলো- পরিবারের লোকেদের চেয়ে ভালো বন্ধু কেউই হতে পারে না। আপনার বাবা-মা কখনোই আপনার অমঙ্গলের কথা চিন্তা করতে পারেন না। আপনার ভাই আপনাকে অবশ্যই সঠিক পথের দিশা দেবেন। তাহলে কেন আপনি পরিবার থেকে ছিটকে দূরে সরে যাচ্ছেন? এখনো সময় আছে- ঘরে ফিরে আসুন। আমাদের এই বিষয়টা মাথায় রাখা দরকার যে, সভ্যতাকে টিকিয়ে রেখেছে পরিবার। যে সমাজে পারিবারিক বন্ধন দুর্বল সেখানে আর যাই হোক শান্তির দেখা পাওয়া যায় না। তাই শেষ কথা হলো- সকল সমস্যার সমাধান করতে হলে সবার আগে পরিবারের কাছে ফিরে আসতে হবে। একজন পিতার দায়িত্ব হবে তার সন্তানকে বুকে আগলে রাখা। তা না হলে তার ধ্বংস হয়ে যাওয়া চেয়ে চেয়ে দেখতে হবে কেবলই। যে প্রজন্মের বুকে অসুস্থ চাওয়া-পাওয়া আর হাহাকার এসে বাসা বেঁধেছে তাদের কি ঘরে ফিরিয়ে এনে সুস্থ করে তোলা যাবে না? এই কাজটা কিন্তু করতেই হবে; নিজের, সমাজের ও রাষ্ট্রের প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে।
আরাফাত শাহীন: শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
দ.ক.মতামত